ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের প্রতিবাদে আবারও দুই মহাসড়ক অবরোধ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
কোথায় অবরোধ
ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয়রা গাছ কেটে ও বাঁশ ফেলে সড়ক অবরোধ করেন। ঢাকা–খুলনা মহাসড়কের সোয়াদী ও মনসুরাবাদ এবং ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কের হামিরদী, নওপাড়া ও পুখুরিয়া এলাকায় যান চলাচল সম্পূর্ণ থেমে যায়। ফলে দুই মহাসড়কের দুই পাশে শত শত যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়ি আটকা পড়ে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
সীমানা পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট
ফরিদপুর-৪ আসন এতদিন ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল। আর ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত ছিল নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা। তবে নির্বাচন কমিশনের গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী, ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই স্থানীয়দের আন্দোলন।
আরো পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৬৪ পদে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, আবেদন শেষ ১০ সেপ্টেম্বর
এলাকাবাসীর অবস্থান
অবরোধ চলাকালে স্থানীয়রা স্লোগান দেন—“আমরা ভাঙ্গার মানুষ, ভাঙ্গাতেই থাকতে চাই”, “ভাঙ্গা আমার মা, আমার মায়ের বিভাজন হতে দেব না”, “নগরকান্দার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া কোনোভাবেই মেনে নেব না।”
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা
অবরোধের খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানার পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রোকিবুজ্জামান জানান, জরুরি যানবাহনগুলো ছাড় দেওয়া হলেও সাধারণ যানবাহন আটকে আছে। তিনি বলেন, “অবরোধকারীদের বুঝিয়েও কাজ হচ্ছে না। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি।”
আগের আন্দোলন ও আইনি পদক্ষেপ
এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর একই দাবিতে মহাসড়কের সাতটি স্থান অবরোধ করেছিলেন এলাকাবাসী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশ্বাসে সেদিন অবরোধ প্রত্যাহার করা হলেও পরে নির্বাচন কমিশনে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। বিএনপির নেতা শহিদুল ইসলামসহ সাতজনের পক্ষ থেকে পাঠানো ওই নোটিশে বলা হয়, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রজ্ঞাপন বাতিল না হলে হাইকোর্টে রিট করা হবে। তবে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়ে দেন, আইন অনুযায়ী চূড়ান্ত তালিকা আদালতে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নেই। আন্দোলন করেও লাভ হবে না।