
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে – প্রতিবছর ২০২৪ জন মেধাবী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে এককালীন ৬০০০ টাকা করে ‘শহীদ স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তি’ প্রদান করা হবে। এই শিক্ষাবৃত্তি চালু হয়েছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে। শুধু একটি বৃত্তি নয়, এটি একধরনের প্রেরণা যা শহীদদের দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের ইতিহাস আগামী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সহায়ক হবে।
কারা পাবেন এই শিক্ষাবৃত্তি?
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, বৃত্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন এমন শিক্ষার্থীরা যারা—
- আর্থিকভাবে অসচ্ছল
- প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত এলাকা থেকে এসেছে
- বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন
- এবং অবশ্যই মেধাবী
বাছাইয়ের মানদণ্ড
- বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে অধ্যয়নরত হতে হবে
- একাডেমিক রেজাল্ট ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নির্বাচন
- প্রতিবছর নতুন করে বাছাই হবে
বৃত্তির পরিমাণ: প্রতি শিক্ষার্থীকে এককালীন ৬০০০ টাকা
বৃত্তির সংখ্যা: প্রতি বছর ২০২৪ জন
প্রদান সময়কাল: প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে
এই শিক্ষাবৃত্তির পেছনের ইতিহাস
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত ৩২ জন শিক্ষার্থী শহীদ হন। তাঁদের স্মৃতিকে ধরে রাখতেই এই বৃত্তির নামকরণ করা হয়েছে ‘শহীদ স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তি’। এই উদ্যোগ কেবল অর্থনৈতিক সহায়তা নয়, বরং শহীদদের সংগ্রাম ও আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এক নিদর্শন।
শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
- আত্মোৎসর্গকারী ছাত্রদের অবদান স্মরণ
- নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করা
- দেশের ইতিহাসে চেতনার বাতিঘর তৈরি
বৃত্তির উদ্বোধন ও প্রথম বরাদ্দ
১ জুলাই তেজগাঁওয়ের করবী হলে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি ৩ জন শিক্ষার্থীর হাতে চেক তুলে দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু করেন।
প্রথম বর্ষে যেসব কলেজ অংশ নিয়েছে
- মোট কলেজ: ৭২৫টি
- শিক্ষার্থী: ২০২৪ জন
- অঞ্চলভিত্তিক: সারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নির্বাচন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এই বৃত্তির সংখ্যা ও পরিমাণ বাড়ানো হতে পারে। এটি দীর্ঘমেয়াদে একটি ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনের বার্তা দিচ্ছে।
আরো পড়ুন: যুক্তরাজ্যে এমবিএ পড়ার সুবর্ণ সুযোগ: শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০% বৃত্তি সুবিধা
এই উদ্যোগ শুধু অর্থনৈতিক সহায়তা নয়, এটি এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক শক্তি ও সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যম। শহীদদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে ‘শহীদ স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তি’ হতে পারে এক স্থায়ী অনুপ্রেরণার উৎস।