নেপালে তীব্র অস্থিরতার মাঝে বিপাকে পড়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার থেকে বেড়াতে যাওয়া অন্তত ৩০ জন পর্যটক। পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর, মেমারি, বর্ধমান শহর, জামালপুর ছাড়াও হুগলি ও জামশেদপুরের পর্যটকরা বর্তমানে নেপালের পোখরা এলাকায় একটি হোটেলে কার্যত বন্দি অবস্থায় আছেন।
দেশটিতে চলমান আন্দোলনে পার্লামেন্ট, সুপ্রিম কোর্ট, বিভিন্ন সরকারি ভবন ও প্রাক্তন মন্ত্রীদের বাড়িতে আগুন ও ভাঙচুর চলছে। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু, আবার পুলিশকেও পিটিয়ে হত্যার মতো ঘটনায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যেই পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা ওলি।
পূর্ব বর্ধমানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কাজলকুমার মণ্ডল জানিয়েছেন, ৪ সেপ্টেম্বর মশাগ্রামের একটি পর্যটন সংস্থার আয়োজনে তাঁরা রওনা দেন। প্রথম তিন দিন কাটান কাঠমান্ডুতে। এরপর পোখরার পথে রওনা দিলে বড় ধরনের বিপদের মুখে পড়েন। যাত্রাপথে এক সময় তিনজন দুষ্কৃতী বাস থামিয়ে চালকের মাথায় পিস্তল ঠেকায়। ভয়ে যাত্রীরা নিশ্চুপ থাকলেও সৌভাগ্যক্রমে তারা পরে নেমে যায়। রাতে হোটেলে পৌঁছলেও তারপর থেকে তারা কার্যত বন্দি।
দলের আরেক সদস্য মেমারির রূপা প্রামাণিক বলেন, ‘‘আমাদের হোটেলের কাছাকাছি দু’টি হোটেল আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকদের ছিল বলে জানা গেছে। এতে আমাদের হোটেল মালিকও আতঙ্কে আছেন। দলে ছোট শিশুরাও আছে। কীভাবে বাড়ি ফিরব বুঝতে পারছি না।’’
পর্যটক দলের সঙ্গে থাকা বর্ধমানের সত্যনারায়ণ সাঁই জানান, বুধবার হোটেলের বাইরে সেনা টহল দেখে কিছুটা স্বস্তি মিললেও পরিস্থিতি এখনও ভয়ংকর। পর্যটন সংস্থার পক্ষ থেকে সাগর মুখোপাধ্যায় বলেন, কাঠমান্ডুতে উত্তেজনা শুরু হওয়ার পরই তাঁরা দল নিয়ে ভক্তপুরে চলে আসেন। কিন্তু পৃথ্বী হাইওয়েতে একাধিক অবরোধের মুখে পড়তে হয়েছে। এখন প্রধান দায়িত্ব পর্যটকদের নিরাপদে দেশে ফেরানো।
পর্যটকদের পরিবারের সদস্যরা আশা করছেন, ভারত ও নেপাল সরকারের আলোচনার মাধ্যমে দ্রুতই বন্দি অবস্থার অবসান ঘটবে এবং সবাই নিরাপদে দেশে ফিরতে পারবেন।