মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও পিছিয়ে দিলেন টিকটক নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউস থেকে নতুন নির্বাহী আদেশ জারি করে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মার্কিন বিচার বিভাগ আইন প্রয়োগ স্থগিত রাখবে। এর ফলে আপাতত মার্কিন ব্যবহারকারীরা টিকটক চালিয়ে যেতে পারবেন।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, বাণিজ্যিক শর্তাবলি নিয়ে প্রাথমিক সমঝোতা হয়েছে। একইসঙ্গে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, টিকটকের মার্কিন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে একটি বিনিয়োগকারী কনসোর্টিয়ামের হাতে, যেখানে সফটওয়্যার জায়ান্ট ওরাকলেরও অংশীদারিত্ব থাকবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
নিরাপত্তা ও বাণিজ্য নিয়ে জটিলতা
টিকটকের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার বড় কারণ জাতীয় নিরাপত্তা, তথ্যের গোপনীয়তা এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্যযুদ্ধ। চীন সম্প্রতি মার্কিন চিপ নির্মাতা এনভিডিয়ার বিরুদ্ধে অ্যান্টি-মোনোপলি আইন ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে, যা আলোচনাকে আরও জটিল করে তুলেছে।
আরো পড়ুন: ইউটিউব লাইভে নতুন যুগ: একসঙ্গে হরিজন্টাল-ভার্টিকাল স্ট্রিম ও সাইড-বাই-সাইড বিজ্ঞাপন
সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ স্টার কাশমান বলেন, “টিকটক নিয়ে আলোচনার প্রক্রিয়া এতবার থেমেছে ও বদলেছে যে, এখনই কোনো সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদী নই।” তার মতে, বাইটড্যান্সের চীনা সরকারের প্রতি দায়বদ্ধতা, নিরাপত্তা শঙ্কা ও অ্যালগরিদম নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়গুলো এখনো বড় বাধা হয়ে আছে।
সামনে কী অপেক্ষা করছে?
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে যদি সমঝোতা হয়ও, তা শেষ নয়—বরং শুরুর ধাপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ উষা হ্যালি বলেন, “চীনারা সাধারণত কোনো চুক্তিকে শুরু হিসেবে ধরে, শেষ নয়। ফলে টিকটকের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে পরবর্তী কয়েক বছরের বাস্তবায়নের ওপর।”
তিনি আরও জানান, কংগ্রেসের কঠোর নজরদারি, যুক্তরাষ্ট্রে ডেটা সংরক্ষণ, স্বাধীন তদারকি এবং চীনা রাজনৈতিক প্রভাব থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে, চীন চাইবে তাদের প্রযুক্তি কোম্পানিকে রক্ষা করতে এবং সাংস্কৃতিক প্রভাব ধরে রাখতে।
সব মিলিয়ে, সময়সীমা পেছানোয় টিকটক ব্যবহারকারীরা আপাতত স্বস্তি পেলেও এর ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চয়তায় ঘেরা।