নেপালে ফেসবুক, ইউটিউব, এক্সসহ জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো বন্ধের ঘোষণা দেশটিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সরকার বলছে, প্ল্যাটফর্মগুলো আইন অনুযায়ী নিবন্ধন না করায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তবে সমালোচকদের অভিযোগ, এটি জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করবে এবং ভিন্নমত দমনে নতুন অস্ত্র হিসেবে কাজ করবে। এদিকে টিকটক ও ভাইবার চালু থাকায় প্রশ্ন উঠছে—কেউ কি বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে? নেপালের এই সিদ্ধান্ত প্রতিবেশী দেশগুলোকেও ভাবনায় ফেলেছে।
নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার), ইউটিউবসহ প্রায় দুই ডজন প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা এসেছে। সরকারের দাবি, বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও এসব প্রতিষ্ঠান দেশটির আইন অনুযায়ী নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়নি। ফলে এবার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।
যোগাযোগ ও তথ্যমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে নেপালে অফিস খোলার আহ্বান জানাচ্ছিল। নিবন্ধনের মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্মগুলোকে আইনগতভাবে জবাবদিহিমূলক করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান এ নির্দেশ মানেনি। ফলে তাদের কার্যক্রম এখন বন্ধ করে দেওয়া হবে।
তবে সব প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হচ্ছে না। টিকটক, ভাইবারসহ আরও তিনটি অ্যাপ আপাতত চালু থাকবে, কারণ তারা ইতিমধ্যেই সরকারিভাবে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে। সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য অনলাইন কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ এবং ভুয়া তথ্য, গুজব বা বেআইনি কার্যক্রম ঠেকানো।
অন্যদিকে সমালোচকেরা বলছেন, সরকারের এই পদক্ষেপ আসলে সেন্সরশিপ চাপানোর কৌশল। তাদের মতে, এতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং নাগরিকদের অধিকার সীমিত হতে পারে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো সতর্ক করেছে, এ ধরনের আইন ভবিষ্যতে সরকারবিরোধী কণ্ঠস্বর দমন করার অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।
সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য দাবি করছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ জরুরি। এতে যেমন ব্যবহারকারীরা দায়িত্বশীল হবেন, তেমনি অপারেটররাও তাদের প্ল্যাটফর্মে শেয়ার হওয়া কনটেন্টের জন্য জবাবদিহি করবেন।