প্রযুক্তির দুনিয়ায় বাংলাদেশিদের পদচারণা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু তার মাঝেও এমন কিছু অর্জন আছে যা আমাদের গর্বিত করে তোলে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তরুণ প্রযুক্তিপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবক মাহাবুব হাসান এবার নিয়ে এলেন তেমনি এক সম্মানের খবর। তিনি হয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম গুগল প্রোডাক্ট এক্সপার্ট অ্যাম্বাসেডর।
গুগল প্রোডাক্ট এক্সপার্ট প্রোগ্রাম কী?
গুগলের একটি বিশেষ উদ্যোগ হলো প্রোডাক্ট এক্সপার্ট প্রোগ্রাম। এখানে বিশ্বজুড়ে দুই হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেন গুগলের ২০০টিরও বেশি পণ্যে। তারা ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেন যেমন হারানো ছবি পুনরুদ্ধার, ইউটিউব চ্যানেল ফিরিয়ে আনা, কিংবা স্থগিত হওয়া গুগল অ্যাকাউন্ট পুনরায় সক্রিয় করা। এই সহায়তা দেওয়া হয় ১৮টিরও বেশি ভাষায়।
কিভাবে অ্যাম্বাসেডর হলেন মাহাবুব?
মাহাবুব হাসান দীর্ঘদিন ধরে এই প্রোগ্রামে যুক্ত। তিনি ২০১৬ সাল থেকে গুগল প্রোডাক্ট এক্সপার্ট কমিউনিটির সক্রিয় সদস্য। তার অবদান, নেতৃত্ব আর অভিজ্ঞতার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে গুগল তাকে অ্যাম্বাসেডর হিসেবে মনোনীত করেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এটাই প্রথমবারের মতো কোনো স্বেচ্ছাসেবকের এই মর্যাদা অর্জন।
তার লক্ষ্য ও ভিশন
অ্যাম্বাসেডর মনোনীত হওয়ার পর মাহাবুব জানিয়েছেন, তার মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের তরুণ ও ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি সমস্যার সমাধানে যুক্ত করা। তিনি চান, এদেশেও আন্তর্জাতিক মানের প্রোডাক্ট এক্সপার্ট তৈরি হোক।
অ্যাম্বাসেডরদের সুযোগ-সুবিধা
গুগল প্রোডাক্ট এক্সপার্টরা শুধু স্বেচ্ছাসেবকই নন, তারা নানা সুবিধাও পান। যেমন:
- বাৎসরিক গুগল সামগ্রী উপহার
- আন্তর্জাতিক সামিটে অংশগ্রহণের সুযোগ
- গুগলের অভ্যন্তরীণ টিমের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার সুযোগ
- নতুন প্রোডাক্ট ও ফিচার সবার আগে পরীক্ষার সুবিধা
দীর্ঘদিনের পথচলা
মাহাবুব শুরু থেকেই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশে গুগল লোকাল গাইড চ্যাপ্টারের প্রতিষ্ঠাতা মডারেটর এবং গুগল ডেভেলপার গ্রুপ ঢাকার ম্যাপ মেকার প্ল্যাটফর্মের রিজিওনাল লিড।
গুগল তার অবদানকে একাধিকবার স্বীকৃতি দিয়েছে।
- ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বাৎসরিক কমিউনিটি অ্যাওয়ার্ড
- ২০২০ সালে গাইডিং স্টার (কমিউনিটি বিল্ডার)
- ২০২১ সালে মিট-আপ চ্যাম্পিয়ান
- ২০২৫ সালে অ্যাক্সেসিবিলিটি চ্যাম্পিয়ান
আরো পড়ুন:
মাতৃত্বের সংজ্ঞা বদলাবে? চীনে আসছে রোবটিক গর্ভ প্রযুক্তি
বাংলাদেশের জন্য এক গর্বের মুহূর্ত
একজন তরুণ স্বেচ্ছাসেবক থেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা সত্যিই গর্বের বিষয়। মাহাবুব হাসানের এই সাফল্য প্রমাণ করে, ইচ্ছা আর অধ্যবসায় থাকলে আমাদের দেশের মানুষও বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে পারে।
দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে রচিত। এর উদ্দেশ্য পাঠকদের তথ্য প্রদান, কোনো ধরনের প্রচার বা বিজ্ঞাপন নয়।