দক্ষিণ ইউরোপে অস্বাভাবিক গরম, দীর্ঘমেয়াদি খরা এবং শুষ্ক জ্বালানি মজুর কারণে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যেই স্পেনে তিনজন এবং পর্তুগালে একজনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে।
দাবানলের প্রভাব
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গ্রিস থেকে পর্তুগাল পর্যন্ত একই সময়ে জ্বলতে থাকা এই দাবানলগুলো অঞ্চলের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহগুলোর মধ্যে একটি। চলমান রেকর্ড-ভাঙা তাপপ্রবাহ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
দাবানল নিয়ন্ত্রণে অন্তত পাঁচটি দেশ আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইতিমধ্যেই অগ্নিনির্বাপক বিমান পাঠিয়েছে। পাশাপাশি, হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
দেশভিত্তিক পরিস্থিতি
গ্রিস:
- পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
- টানা পাঁচ দিন ধরে কিয়োস দ্বীপে আগুন জ্বলছে, ফলে বহু মানুষকে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
- রাজধানী এথেন্স এবং আশপাশের এলাকায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি।
স্পেন:
- দেশটিতে ১৪টিরও বেশি বড় দাবানল নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় রয়েছে।
- গণপরিবহন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে; একাধিক মহাসড়ক বন্ধ এবং উচ্চগতির রেল পরিষেবা স্থগিত।
- ইউরোপীয় বন দাবানল তথ্য ব্যবস্থার হিসাব অনুযায়ী, এই বছরে ইতিমধ্যে ৩ লাখ ৯০ হাজার একরের বেশি জমি পুড়ে গেছে।
- সম্প্রতি এক স্বেচ্ছাসেবী দমকলকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ অগ্নিসংযোগের সন্দেহে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পর্তুগাল:
- দেশটিতে সাতটিরও বেশি বড় দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে।
- প্রায় চার হাজার দমকলকর্মী কাজ করছেন।
- জরুরি পরিস্থিতির কারণে রাত পর্যন্ত সতর্কতা বহাল রাখা হয়েছে।
- আন্তর্জাতিক সহায়তা ও সতর্কতা
দাবানল নিয়ন্ত্রণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা অব্যাহতভাবে সহায়তা পাঠাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন তুরণ্ত স্থানান্তর, উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে।
আরো দেখুন: পাকিস্তানে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা ৬৫০ ছাড়ালো, ত্রাণকাজে বাধা
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, দক্ষিণ ইউরোপের দীর্ঘমেয়াদি খরা ও অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটাতে পারে। তাই স্থানীয় জনগণকে সতর্ক থাকা এবং নিরাপদ স্থানে অবস্থান করা অত্যন্ত জরুরি।
দক্ষিণ ইউরোপে এই দাবানল পরিবেশ ও জীবনযাত্রার জন্য বড়ো হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। আগামীদিনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং জরুরি পদক্ষেপ অপরিহার্য।