টাকা এমন একটা বস্তু যা না থাকলে একজন মানুষ অসহায়। এই টাকা মানুষ তার অনেক পরিশ্রম মাধ্যমে ইনকাম করে। এই টাকা যখন নকল হয় তখন সে ব্যক্তির সমস্ত পরিশ্রমের ফলই বৃথা হয়ে যায়। তাই নিজের পারিশ্রমিক বা যেকোনো লেনদেনের সময় আসল টাকা চেনা অতি জরুরি। টাকা চেনার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। সেই উপায়গুলো আমরা আজকে আপনাদের সামনে তুলে ধরব। যা থেকে আপনারা আসল টাকা চিনতে পারবেন এবং প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।
১. নিরাপত্তা সুতার মাধ্যমে জাল টাকা ও আসল টাকা চেনার উপায়
১০০ ও ৫০০ টাকার নোটে: নোটের বাম পাশে ৪ মিলিমিটার চওড়া একটি চুলের বেণীর মতো নিরাপত্তা সুতা আছে। এই সুতার রং লাল থেকে সবুজে পরিবর্তিত হয়। সেই সঙ্গে সুতার ওপর নোটের মূল্যমান (১০০ বা ৫০০) লেখা থাকে।


২০০ টাকার নোটে: বাম পাশে ৪ মিলিমিটার চওড়া নিরাপত্তা সুতা রয়েছে। সেখানে দেখা যায় লাল থেকে সবুজে পরিবর্তিত হয়। সুতার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো এবং “২০০ টাকা” লেখা দেখা যায়। নোটটি নাড়াচাড়া করলে হলোগ্রাফিক (ঝলমলে) ইমেজ দেখা যায়।

১০০০ টাকার নোটে: এখানে নিরাপত্তা সুতা আরও একটু চওড়া ৫ মিলিমিটার এর রং সোনালি থেকে সবুজে বদলে গেছে এমন দেখা যাবে। সুতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম ও “১০০০ টাকা” লেখা থাকে। নোটটি নাড়ালে ঝলমলে হলোগ্রাফিক ইমেজ দেখা যায়।

লুকানো ছাপা (Hidden Printing)
১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে: নোটের সামনের দিকের নিচের মাঝখানে নোটের মূল্যমান (যেমন ১০০, ৫০০, ১০০০) লুকানোভাবে ছাপানো থাকে। এই লেখা খালি চোখে দেখা যায় না, কিন্তু নোটটি কাত করে (অনুভূমিকভাবে) ধরলে স্পষ্টভাবে দেখা যায়।



২০০ টাকার নোটে: একইভাবে নিচের মাঝখানে “TWO HUNDRED TAKA” কথাটি লুকানোভাবে ছাপানো থাকে। নোটটি কাত করলে এই লেখাটি দেখা যায়।

অতি সূক্ষ্ম আকারের লেখা (Microprinting)

১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে:
নোটের পেছনের দিকের নির্দিষ্ট অংশে খুব ছোট আকারে “BANGLADESH BANK” লেখা থাকে।
এই লেখা এত সূক্ষ্ম যে খালি চোখে দেখা যায় না।
২০০ টাকার নোটে:
পেছনের দিকের নির্দিষ্ট জায়গায় ছোট আকারে “200” লেখা থাকে।
এই সূক্ষ্ম লেখা দেখতে হলে—
- আতশ কাচ (magnifying glass) ব্যবহার করতে হবে, অথবা
- স্মার্টফোনের ক্যামেরা জুম করে বা
- “Flashlight & Magnifying Glass” অ্যাপ ব্যবহার করে দেখা যাবে।
আরো পড়ুন: আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎ বন্ধের হুমকিতে কি করছে সরকার
রং পরিবর্তনশীল কালি (OVI) ও SPARK বৈশিষ্ট্য
১০০ ও ১০০০ টাকার নোটে:
এই নোটগুলো নাড়াচাড়া করলে রঙ পরিবর্তনশীল কালি (Optically Variable Ink) ব্যবহার করা অংশে রং সোনালি থেকে সবুজে পরিবর্তিত হয়।
৫০০ টাকার নোটে:
রং পরিবর্তন হয় মেজেন্টা (গোলাপি-লালচে) থেকে সবুজে।
এছাড়া ১০০০ টাকার নোটের পেছনের বাম পাশে, হালকা নীল রঙের “BANGLADESH BANK” লেখা থাকে, যা নোটটি কাত করলে বা নাড়ালে দেখা যায়।



SPARK বৈশিষ্ট্য (২০০ টাকার নোটে)
২০০ টাকার নোটের ওপরের ডান কোণায় বিশেষ ধরনের SPARK কালি (optically variable magnetic ink) দিয়ে “200” লেখা আছে।
নোটটি নাড়াচাড়া করলে—
- লেখার রং সোনালি থেকে সবুজে পরিবর্তিত হয়, এবং
- পাশের একটি উজ্জ্বল বার (shining strip) উপরে-নিচে নড়াচড়া করতে দেখা যায়।

অসমতল ছাপা (Raised Print)
১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে: এই নোটগুলোর সামনের ও পেছনের দিকের কিছু অংশে ছাপা সামান্য উঁচু থাকে, যা আঙুলে খসখসে বা উঁচু অনুভূত হয়।
এই উঁচু ছাপা পাওয়া যায়—
- নোটের ডিজাইনের অংশে,
- মাঝখানের লেখায়,
- ইংরেজি ও বাংলায় লেখা মূল্যমানের সংখ্যায়,
- এবং নোটের বাম পাশে থাকা সমান্তরাল সরলরেখায়।
১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে রয়েছে ৭টি হেলানো সরলরেখা, আর ২০০ টাকার নোটে রয়েছে ৮টি সরলরেখা। এই রেখাগুলোর নিচে থাকা ছোট ছোট বৃত্তাকার বা ত্রিভুজ আকৃতির ছাপও আঙুলে স্পর্শ করলে খসখসে অনুভব হয়।


