চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ভয়াবহ সংঘর্ষের পর পুরো ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার গভীর রাতে হওয়া এ ঘটনায় অন্তত ৬০ শিক্ষার্থী আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী নামানো হয়। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সব বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত করেছে, যদিও ক্লাস চালু থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষের পর রবিবার (১৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ক্লাস চলমান থাকবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, পরীক্ষাগুলো স্থগিত করা হলেও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম শাটল ট্রেন আগের সূচি অনুযায়ী চলবে।
শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ভবনের দারোয়ান মারধর করার ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এ উত্তেজনার সূত্রপাত।
এ ঘটনার পরপরই শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানাতে গেলে স্থানীয় লোকজন তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়, যা কয়েক দফায় চলে।
সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। তাঁদের মধ্যে ২১ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। কয়েকজনের মাথা, চোখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
চিকিৎসাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত প্রধান কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, “এত শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে আহত অবস্থায় আগে কখনো আসতে দেখিনি। ধারালো অস্ত্রের আঘাতসহ লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেলে অনেককে গুরুতর জখম করা হয়েছে।”
রাত সাড়ে তিনটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ আরিফ জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। ইতোমধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।