টেক প্রেমীদের জন্য ফোন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত মাঝে মাঝে চরম সাহসী মনে হতে পারে। আমি সম্প্রতি আমার Pixel 9 Pro XL বিক্রি করে Vivo X200 Pro কিনেছি। কেন এমন সিদ্ধান্ত? প্রথমে মনে হয়েছিল কিছুটা বিপরীতমুখী – কারণ Pixel-এ তো স্টক অ্যান্ড্রয়ডের নিখুঁত অভিজ্ঞতা মেলে। তবে এক মাস ধরে Vivo ব্যবহার করার পর আমি বলতে পারি, কোনো আফসোস নেই। বরং, এখন আমার ফোন ব্যবহার আরও আনন্দদায়ক হয়ে উঠেছে।
Pixel 9 Pro XL-এর অসুবিধা
Pixel 9 Pro XL সত্যিই চমৎকার একটি ফোন, কিন্তু কিছু সমস্যা আমাকে বিরক্ত করছিল। বিশেষ করে ব্যাটারি। প্রায় এক বছর ব্যবহার করার পর, আমার Pixel-এর ব্যাটারি লাইফ বেশ মধ্যম মানের হয়ে গেছে। এছাড়া অনেক ফিচার ইন্টারনেট সংযোগের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, যা সবসময় সুবিধাজনক ছিল না।
কিন্তু আসল সমস্যা শুরু হয়েছিল ক্যামেরার ক্ষেত্রে। কিছু সফটওয়্যার আপডেটের পরে, Pixel-এর রঙের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয়ে কিছুটা স্বাভাবিক কনট্রাস্ট হারিয়েছে। পোর্ট্রেট মোড সবসময় হতাশাজনক ছিল – এটি শুধুমাত্র ৩x ডিজিটাল ক্রপ ব্যবহার করে এবং ৫x টেলিফটো লেন্সে পোর্ট্রেট তোলার সুযোগ দেয় না। এজ ডিটেকশন অসঙ্গতিপূর্ণ এবং ব্যাকগ্রাউন্ড বোকেহ প্রায় কৃত্রিম মনে হয়। এমনকি iPhone 16 Pro-এর সঙ্গে তুলনা করলে Pixel-এর ছবিতে ডিটেইল কম দেখা যায়।
আরো পড়ুন:
Redmi Note 15 Pro+ গ্লোবাল ভার্সনে বড় পরিবর্তন, ক্যামেরা ও ব্যাটারিতে কমতি
ভিডিও শুটিং-এও Pixel পিছিয়ে ছিল। LOG মোডের অভাব, ৫০MP ফটো তোলার সময় ধীর প্রসেসিং – সবই ছবি নেওয়ার অভিজ্ঞতা ক্ষতিগ্রস্ত করছিল।

Vivo X200 Pro-র সঙ্গে নতুন অভিজ্ঞতা
এই সব কারণে আমি Vivo X200 Pro কিনে ফেলি। ব্যক্তিগত ছুটিতে আমি এটি নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যাই। ৭ কেজি ব্যাগেজ সীমার কারণে আলাদা ক্যামেরা (Sigma fp) নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি, কিন্তু Vivo X200 Pro আমাকে একেবারে মিসিং ফিল করায়নি।
Vivo X200 Pro-তে আছে তিনটি চমৎকার ক্যামেরা:
- ৫০MP Zeiss মেইন ক্যামেরা – বিশদ চমৎকার।
- ৫০MP আল্ট্রা-ওয়াইড – আমি কম ব্যবহার করি।
- ২০০MP ৩.৭x টেলিফটো লেন্স – যেটি পোর্ট্রেটের জন্য বিশেষ।
পোর্ট্রেট শুটিং অভিজ্ঞতা সত্যিই Mirrorless ক্যামেরার মতো। S-RAW (Super RAW) মোডে হাইলাইটের রোল-অফ মিররলেস ক্যামেরার মতোই প্রাকৃতিক। ৩.৭x ফোকাল লেন্থ ব্যাকগ্রাউন্ড কম্প্রেশন দারুণ এবং ৬-৭x পর্যন্ত জুম করলেও ডিটেইল প্রায় অক্ষুণ্ণ থাকে।
ভিডিওর ক্ষেত্রেও Vivo চমৎকার পারফর্ম করছে। কিছু লো-লাইট ভিডিও iPhone 16 Pro-এর চেয়ে ভালোও হয়েছে। যদিও ক্যামেরা অ্যাপের সরলতা Pixel-এর মতো নয় এবং অনেক ফিচার ‘More’ অপশনে লুকানো, তবু অভিজ্ঞতা অসাধারণ।
ব্যাটারি স্বাধীনতা
Vivo X200 Pro-এর ব্যাটারি লাইফ চমৎকার। একাধিক ভ্রমণ দিনে ফোনটি সহজেই দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত চলে। ৯০W ফাস্ট চার্জিং সুবিধা মানে শাওয়ার নেওয়ার আগে চার্জ দিলে কিছুক্ষণের মধ্যে ৯০% পর্যন্ত চার্জ হয়ে যায়। ব্যাটারি নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই।
Pixel-এর কিছু অভাব অনুভূত হয়
- সফটওয়্যার: Funtouch OS মসৃণ এবং কার্যকর, তবে Android 16-এর মতো পলিশড নয়।
- ডিসপ্লে: ফ্ল্যাট ডিসপ্লের অভাব, এজ কার্ভের কারণে টেম্পারড গ্লাস প্রোটেক্টর ব্যবহার কঠিন।
- হ্যাপটিকস: Pixel-এর মতো স্পর্শকাতর ফিডব্যাক নেই।
তবুও, এই ছোটখাটো অসুবিধা ছাড়াও Vivo X200 Pro ব্যবহার করে আমি far বেশি আনন্দ উপভোগ করছি। এক মাসের বেশি সময় ধরে ব্যবহার করার পরও ফোনটি চমৎকার।
Disclaimer: এই আর্টিকেলটি ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে। ব্যক্তিগত পছন্দ ও চাহিদা অনুযায়ী অভিজ্ঞতা পরিবর্তিত হতে পারে।