উত্তর কেনিয়ার তুর্কানা হ্রদের তীরে প্রাচীন মানবজাতির এক অবিশ্বাস্য নিদর্শন আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের স্তরের নিচে পাওয়া এই পায়ের ছাপগুলো প্রায় ১৫ লাখ ২০ হাজার বছর আগের বলে ধারণা করা হচ্ছে। আবিষ্কারটি মানব বিবর্তনের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন গবেষকেরা।
প্রাচীন যুগের বিরল নিদর্শন
তুর্কানা হ্রদের আশপাশে অনুসন্ধান চালিয়ে বিজ্ঞানীরা শুধু মানুষের নয়, বৃহৎ আকৃতির পাখি ও অন্যান্য প্রাণীর পায়ের ছাপও শনাক্ত করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই এলাকাটি তখন বিভিন্ন প্রাণী ও মানুষের সহাবস্থানের কেন্দ্র ছিল।
আধুনিক প্রযুক্তিতে চিহ্নিত প্রাচীন ছাপ
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম পরিচালক রেবেকা ফেরেল জানান, জৈবিক নৃবিজ্ঞানে জীবাশ্ম থেকে তথ্য অনুসন্ধান সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। এই আবিষ্কার সেই ক্ষেত্রে এক অসাধারণ উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হবে।
আরো পড়ুন: সেরা ২০টি কালী পূজার গান ২০২৫ | Kali Puja Special Song 2025
তিনি আরও বলেন, “আমরা অত্যাধুনিক থ্রিডি ইমেজিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে পায়ের ছাপগুলো বিশ্লেষণ করেছি। এটি আমাদের মানব বিবর্তনের যান্ত্রিক দিকগুলো বুঝতে সাহায্য করেছে—একটি পা চলার সময় কীভাবে মাটি স্পর্শ করে, চাপ সৃষ্টি করে ও ভারসাম্য রক্ষা করে, তা আমরা এখন আরও স্পষ্টভাবে জানি।”
দুই প্রজাতির মানুষের সহাবস্থান
রাটগার্স স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সেস ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ক্রেগ ফেইবেল জানান, একই এলাকায় দুই ভিন্ন প্রজাতির প্রাচীন মানুষ বসবাস করত। তাঁর মতে, “হোমো ইরেক্টাস প্রজাতি তুলনামূলকভাবে আধুনিক ছিল এবং তারা দীর্ঘ দূরত্বে চলাফেরা করত। অন্যদিকে, প্যারানথ্রোপাস বোয়েসি শারীরিকভাবে শক্তিশালী হলেও তাদের চলাচল সীমিত ছিল।”
গবেষকেরা বিশ্বাস করেন, এই আবিষ্কার মানব বিবর্তনের পথচলা সম্পর্কে নতুন ধারণা দেবে। বিশেষত, প্রাচীন মানুষের জীবনধারা, চলাফেরার ধরন এবং পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজন বোঝার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।