কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকতে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সংলাপ। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ৪০টি দেশের প্রতিনিধি, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের কর্মকর্তারা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারাও এই প্ল্যাটফর্মে আমন্ত্রিত হয়েছেন।
রাজনৈতিক দল ও আন্তর্জাতিক সংস্থার অংশগ্রহণ
সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জাবিউল্লাহ এবং গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান উপস্থিত আছেন। আয়োজকদের মতে, সংকট সমাধানে সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ত করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি ছাড়াও শরণার্থী ও মানবাধিকার ইস্যুতে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন এই আলোচনায়।
রোহিঙ্গাদের অভিজ্ঞতা ও চাহিদা
প্রথম দিনে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা তাদের ভোগান্তি ও প্রত্যাবাসন-সংক্রান্ত সমস্যা তুলে ধরেন। তারা জানান, মিয়ানমারে ফেরার জন্য নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা অপরিহার্য।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য ও প্রত্যাশা
আজ (দ্বিতীয় দিন) বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন। তিনি রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের রূপরেখা তুলে ধরবেন এবং একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সমর্থন চাইবেন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এই প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন।
আরো পড়ুন: বরিশালে গ্রেপ্তার তোহিদ আফ্রিদি, ঢাকায় আনা হচ্ছে সিআইডির হেফাজতে
আলোচনার মূল বিষয়সমূহ
সম্মেলনে পাঁচটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে—
- রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক বিচার নিশ্চিতকরণ।
- শরণার্থী তহবিলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি।
- টেকসই প্রত্যাবাসনের রূপরেখা তৈরি।
- রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তোলা।
- আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আনা।
বাংলাদেশের অবস্থান
সরকার বলছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি ক্রমেই ভুলে যাচ্ছে। তাই নতুন করে আলোচনায় আনতেই এ আয়োজন। কক্সবাজার সম্মেলনকে সরকার একটি বড় সফলতা হিসেবে দেখছে।
অনুষ্ঠান থেকে পাওয়া রেজুলেশন আগামী মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উত্থাপন করা হবে। এতে অন্তত ৭০টি দেশের প্রতিনিধির অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। সরকারের আশা, এতদিনের বিচ্ছিন্ন আলোচনার বদলে এবার একটি প্রাতিষ্ঠানিক অগ্রগতি হবে।