এশিয়া কাপের সুপার ফোরে ভারত–শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ঘটে গেল এক বিরল ক্রিকেটীয় ঘটনা। সুপার ওভারে বাংলাদেশি আম্পায়ার গাজী সোহেলের আউটের সিদ্ধান্তের পর রান আউট হলেও নিয়মের কারণে বেঁচে যান লঙ্কান অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা। ঘটনাটি বিভ্রান্ত করেছে খেলোয়াড় থেকে শুরু করে দর্শক ও ধারাভাষ্যকারদেরও।
কীভাবে ঘটল ঘটনাটি
শুক্রবার রাতের ম্যাচে সুপার ওভারের চতুর্থ বলে ভারতের বাঁহাতি পেসার অর্শদীপ সিং শানাকাকে অফ স্টাম্পের বাইরে দুর্দান্ত এক ইয়র্কার করেন। শানাকা ব্যাটে বল লাগাতে ব্যর্থ হলে বল সরাসরি যায় উইকেটকিপার সঞ্জু স্যামসনের হাতে। সঙ্গে সঙ্গে অর্শদীপ ক্যাচ আউটের আবেদন করেন এবং আম্পায়ার গাজী সোহেল আউট ঘোষণা দেন।
কিন্তু এ সময়েই শানাকা দৌড়ে এক রান নেওয়ার চেষ্টা করেন। স্যামসন আন্ডারআর্ম থ্রো করে স্টাম্প ভাঙেন, আর ক্রিজ থেকে তখন অনেক দূরে ছিলেন শানাকা। সবাই ভেবেছিলেন, রান আউট হয়ে গেলেন তিনি।
আইনের ফাঁকেই বেঁচে যাওয়া
ক্রিকেটের আইন অনুযায়ী, আম্পায়ার যখন কোনো ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করেন, তখনই বল ‘ডেড’ হয়ে যায়। অর্থাৎ এরপর যা কিছু ঘটে, তার কোনো মূল্য নেই। শানাকা সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন। আলট্রা এজে দেখা যায়, ব্যাটে বল লাগেনি। ফলে ক্যাচ আউটের সিদ্ধান্ত বাতিল হয়। কিন্তু যেহেতু আউট ঘোষণার পর বল ইতিমধ্যেই ‘ডেড’ হয়ে গিয়েছিল, তাই রান আউটও গণনা করা হয়নি।
আরো পড়ুন: আজকের সোনার দাম – ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আইসিসির আইনের ২০.১.১.৩ ধারাতেও স্পষ্টভাবে বলা আছে—আম্পায়ার আউট ঘোষণা করলেই বল ডেড হয়ে যায়, পরে সিদ্ধান্ত বদলালেও তা কার্যকর থাকে। এই নিয়মের কারণেই রান আউট হলেও টিকে যান শানাকা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাখ্যা
ভারতের সাবেক পেসার ইরফান পাঠান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। তিনি জানান, “আম্পায়ার যখন ক্যাচ আউট ঘোষণা করেছেন, তখনই বল ডেড হয়ে গেছে। সিদ্ধান্ত বদলালেও ডেড বলের অবস্থা বদলায় না। তাই রান আউটও কার্যকর হয়নি।”
ম্যাচের ফল
যদিও নিয়মে বেঁচে যান শানাকা, তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। সুপার ওভারের পরের বলেই অর্শদীপ সিং তাঁকে আউট করেন। শ্রীলঙ্কা থামে মাত্র ২ রানে। এরপর ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার প্রথম বলেই ৩ রান নিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দেন।
এর আগে শ্রীলঙ্কা ২০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শেষ বলে ২ রান নিয়ে টাই করে। ঠিক এক বছর আগেও দুই দল টি-টোয়েন্টিতে টাই করেছিল, সেবারও সুপার ওভারে শ্রীলঙ্কা ২ রানে থেমেছিল এবং ভারত এক বলেই জয় তুলে নিয়েছিল।