গত এক বছরে দেশে প্রায় আড়াই শতাধিক শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এক লাখেরও বেশি শ্রমিক। চাকরি হারানো এসব শ্রমিক সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন, কেউ কেউ পেশা পরিবর্তন করলেও অনেকে এখনো বেকার জীবনযাপন করছেন।
শিল্পাঞ্চল পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশের ২৩৯টি শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে এক লাখ এক হাজার ৮৯৩ জন শ্রমিক তাদের কর্মসংস্থান হারিয়েছেন। ফলে শ্রমিকদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যরাও বিপাকে পড়েছেন।
আস-সুবাহ নিটওয়্যার লিমিটেডের (বন্ধ) জেনারেল ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম জয় জানান, দীর্ঘদিন চাকরি করার ফলে কিছু অর্থ সঞ্চয় করেছিলেন। এখন সেই টাকাতেই সংসার চলছে। মাসে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হলেও টানা দুই মাস ধরে কোনো আয় না থাকায় সঞ্চয় ফুরিয়ে আসছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, সামনে বিকল্প কোনো উপায় খুঁজে নিতে হতে পারে, তা ভালো হোক বা খারাপ।
অনেক শ্রমিক বাসাভাড়া বা দোকানের বাকি টাকা পরিশোধ না করেই গ্রামে ফিরে গেছেন। কেউ আবার এখনো অনিশ্চিত ভবিষ্যতের অপেক্ষায় শহরে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন।
আরো পড়ুন:
আওয়ামী লীগ আবার ফিরলে কেউ ছাড় পাবে না : রাশেদ খান
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) জানায়, দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ পরিবার এখন আয়ের চেয়ে বেশি খরচ করছে। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশে, যেখানে ২০২২ সালে এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ।
একই সময়ে অতি দারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে পৌঁছেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, দারিদ্র্য ও অতি দারিদ্র্য—দুটিই গত তিন বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
চাকরি হারানো শ্রমিকদের বড় একটি অংশ দ্রুত বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবি জানাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন কর্মসংস্থান তৈরি না হলে দারিদ্র্যের হার আরও বাড়বে, যা দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।