Thursday, October 16, 2025
Homeএইচএসসি রেজাল্ট ২০২৫: পাশ ও জিপিএ–৫ কম কেন, জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা

এইচএসসি রেজাল্ট ২০২৫: পাশ ও জিপিএ–৫ কম কেন, জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা

২০২৫ সালের এইচএসসি রেজাল্ট প্রকাশের পর যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা বিশ্লেষণ ও হতাশার ঢেউ, তখন নিজস্ব ব্যাখ্যা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার। তাঁর ভাষায়, ফলাফল মানে কেবল সংখ্যা নয়; এটি পরিবার, পরিশ্রম আর ভবিষ্যতের গল্প।

‘শেখার সংকট বহু আগেই শুরু হয়েছে’

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন,

এ বছর গড় পাশের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ, আর জিপিএ–৫ পেয়েছে ৬৯ হাজার ৯৭ জন। আগের বছরের তুলনায় এই হার অনেক কম, তবে এর কারণ জটিল নয় বরং অস্বস্তিকরভাবে সহজ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শেখার সংকট প্রাথমিক স্তর থেকেই শুরু হয়। বছরের পর বছর সেই ঘাটতি জমে থাকে, অথচ বাস্তবতার মুখোমুখি হতে আমরা চাইনি।

‘সংখ্যার সাফল্য নয়, শেখার সাফল্য চাই’

অধ্যাপক সি আর আবরার আরও বলেন,

আমরা এমন এক সংস্কৃতি তৈরি করেছি যেখানে পাশের হারই সাফল্যের প্রতীক হয়ে উঠেছিল, জিপিএ–৫ সংখ্যাই ছিল গর্বের মানদণ্ড। কিন্তু সেই সংস্কৃতিতে আমরা প্রকৃত শেখার সংকট আড়াল করেছি।

তিনি জানান, এখন সময় এসেছে সেই মানসিকতার পরিবর্তন আনার। যে ফলাফল শেখাকে মূল্যায়ন করে, সেটিই হোক প্রকৃত সাফল্য।

‘ন্যায্য নম্বর দিয়ে সততা, অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে সন্তুষ্টি নয়’

শিক্ষা উপদেষ্টা জানান, এ বছর মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় কঠোরতা আনা হয়েছে যাতে ফলাফলের বাস্তবতা বিকৃত না হয়।

আমরা ‘অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে সন্তুষ্টি’ নয়, বরং ‘ন্যায্য নম্বর দিয়ে সততা’কে বেছে নিয়েছি,” বলেন তিনি।
এই সিদ্ধান্ত সহজ নয়, তবে প্রয়োজনীয়, কারণ বাস্তবতা স্বীকার না করলে মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতি অন্যায় হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

‘এটি ব্যর্থতা নয়, আত্মসমালোচনার সময়’

অধ্যাপক আবরার বলেন,

এই ফলাফলকে আমি ব্যর্থতা নয়, বরং আত্মসমালোচনার সুযোগ হিসেবে দেখছি। এখন সময় এসেছে শিক্ষক, অভিভাবক, বোর্ড ও শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে বসে শেখার ভবিষ্যৎ নিয়ে সৎভাবে ভাবার।”

আরো পড়ুন : এইচএসসি রেজাল্ট ২০২৫ প্রকাশ: ঢাকা বোর্ডের ফলাফল দেখবেন যেভাবে

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব শিক্ষা বোর্ডকে তাদের মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার স্বতন্ত্র পর্যালোচনা রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, শিক্ষাবিদ ও নীতিনির্ধারকদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠনের পরিকল্পনাও জানানো হয় যারা শেখার মূল ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করবেন।

‘উদ্দেশ্য অভিযোগ নয়, সমাধান খোঁজা’

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন,আমরা কাউকে দায়ী করতে চাই না। এখন আমাদের লক্ষ্য-শিক্ষার গুণগত মান পুনর্গঠন করা। কারণ শেখার জায়গায় ঘাটতি থাকলে, পাশের হার বাড়িয়েও দেশের ভবিষ্যৎ গড়া সম্ভব নয়।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

সর্বশেষ নিউজ