দীর্ঘদিন ধরে ফোন ব্যবহারকারীরা সিম ট্রে খুলে প্লাস্টিকের ছোট কার্ড ঢোকানোর ঝামেলা সামলেছেন। কিন্তু নতুন iPhone Air মডেল একেবারে বদলে দিল সেই চিত্র। এই স্মার্টফোন সম্পূর্ণভাবে eSIM-নির্ভর, অর্থাৎ শারীরিক সিম ছাড়াই ব্যবহার করা যাবে মোবাইল নেটওয়ার্ক।
ভবিষ্যতের পথে বড় পদক্ষেপ
সিসিএস ইনসাইটের বিশ্লেষক কেস্টার ম্যানের মতে, অ্যাপলের এই পদক্ষেপ শারীরিক সিম কার্ডের বিদায়ের সূচনা। যদিও একেবারে সব ফোনে সিম ট্রে বাদ যাচ্ছে না, তবে প্রযুক্তির দিকনির্দেশনা স্পষ্ট—আগামী দিনে মোবাইল দুনিয়া পুরোপুরি eSIM-এর ওপর নির্ভর করবে।
বর্তমানে অনেক ফোনেই শারীরিক সিম ও eSIM—দুটোই ব্যবহার করার সুযোগ থাকে। কিন্তু নতুন iPhone Air হবে বিশ্ববাজারে প্রথম শুধু eSIM-এ চলা আইফোন। যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্য ২০২২ সাল থেকেই ই-সিম নির্ভর আইফোন বিক্রি হচ্ছে।
কোন দেশে কেমন থাকবে সুবিধা?
অ্যাপল এখনো সব মডেল থেকে সিম ট্রে সরিয়ে নিচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ, নতুন iPhone 17 সিরিজে কিছু দেশে শুধু eSIM থাকবে, আবার বেশিরভাগ বাজারে এখনো সিম ট্রে রাখা হচ্ছে। প্রতিযোগী ব্র্যান্ড স্যামসাং ও গুগলও একই কৌশল নিচ্ছে—ই-সিম যুক্ত করার পাশাপাশি শারীরিক সিম ব্যবহারের সুযোগ বজায় রাখছে।
বাজারে ই-সিমের উত্থান
সিসিএস ইনসাইটের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী,
- ২০২৪ সালের শেষে বিশ্বে ১৩০ কোটির বেশি স্মার্টফোন ই-সিমে চলবে।
- ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৩১০ কোটিতে পৌঁছাবে।
প্রযুক্তি বিশ্লেষক পাওলো পেসকাতোরে বলেন, “এটা শুধু সময়ের ব্যাপার। খুব শিগগিরই সিম ট্রে পুরোপুরি হারিয়ে যাবে।”
আরো দেখুন: দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টি ফেরাতে দেশীয় চিপ উদ্ভাবন করলো আইআইটি ধানবাদের গবেষকরা
ই-সিমের সুবিধা
ই-সিম ব্যবহারে একাধিক বাস্তব উপকারিতা রয়েছে—
- ফোনের ভেতরে অতিরিক্ত জায়গা বাঁচে, ফলে বড় ব্যাটারি ব্যবহার করা সম্ভব।
- প্লাস্টিক সিম কার্ড বাদ দেওয়ায় পরিবেশবান্ধব।
- বিদেশ ভ্রমণে সহজেই অপারেটর বদলানো যায়।
- অপারেটর বদলের জন্য দোকানে যাওয়ার ঝামেলা কমে।
তবে চ্যালেঞ্জও আছে
প্রযুক্তি বিশ্লেষক কেস্টার ম্যান মনে করেন, বয়স্ক বা প্রযুক্তি ব্যবহারে অনভ্যস্ত মানুষের জন্য ই-সিম গ্রহণ করা কিছুটা কঠিন হতে পারে। এজন্য টেলিকম ইন্ডাস্ট্রিকে প্রক্রিয়াটি সহজভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।
সব মিলিয়ে, অ্যাপল এই পদক্ষেপের মাধ্যমে প্লাস্টিক সিম কার্ডকে বিদায় জানানোর দিকেই এগোচ্ছে। আর বিশ্লেষকদের মতে, কয়েক বছরের মধ্যেই পুরো বিশ্ব মোবাইল যোগাযোগে সিম ট্রে বিহীন যুগে প্রবেশ করবে।