অ্যাপল তাদের সবচেয়ে পাতলা স্মার্টফোন iPhone Air বাজারে এনেছে, যা মাত্র ৫.৬ মিলিমিটার পুরু ও ১৬৫ গ্রাম ওজনের। অনেকেই এর টেকসই হওয়া নিয়ে সন্দিহান ছিলেন, তবে প্রাথমিক ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা বলছে—ডিজাইনের ঝুঁকি সত্ত্বেও ফোনটি যথেষ্ট মজবুত। প্রায় ১,০০০ ডলার মূল্যের এই মডেলটি অ্যাপলের iPhone Plus সিরিজের পরিবর্তে এসেছে।
নকশা ও স্থায়িত্ব

iPhone Air-এর মূল আকর্ষণ এর স্লিম ডিজাইন। ৬.৫-ইঞ্চির ডিসপ্লে হাতে ধরা সহজ, আর বাঁকানো ধাতব ফ্রেম এটিকে প্রিমিয়াম অনুভূতি দেয়। টেকসই রাখতে অ্যাপল ব্যবহার করেছে টাইটানিয়াম ফ্রেম এবং নতুন Ceramic Shield 2, যা আগের তুলনায় তিনগুণ বেশি স্ক্র্যাচ-প্রতিরোধী ও চারগুণ বেশি ক্র্যাক-প্রতিরোধী। এমনকি ১৩০ পাউন্ড চাপের পরীক্ষায়ও ফোনটি ভাঙেনি।

এছাড়া, ডিভাইসটির IP68 সার্টিফিকেশন থাকায় ধুলো ও পানির ঝুঁকি থেকেও সুরক্ষিত। যদিও ব্যাটারির আকার কমানো হয়েছে, দৈনন্দিন ব্যবহারে এর পারফরম্যান্স যথেষ্ট সন্তোষজনক বলেই প্রাথমিক রিভিউতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্যামেরা অভিজ্ঞতা
এই মডেলে রয়েছে কেবল একটি ৪৮ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড-অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা, যা ডিফল্টভাবে ২৪ মেগাপিক্সেলের ছবি তোলে। আলাদা আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স না থাকায় বিস্তৃত ল্যান্ডস্কেপ ছবি তুলতে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে ২ গুণ ডিজিটাল জুমে ছবির মান যথেষ্ট স্পষ্ট ও বিস্তারিত থাকে। সেলফি ক্যামেরা ১৮ মেগাপিক্সেল, যেখানে নতুন Center Stage ফিচার ভিডিও কল ও গ্রুপ ছবিতে ফ্রেমিং স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামঞ্জস্য করে।




ব্যাটারি ও চার্জিং
অ্যাপলের দাবি, iPhone Air এক চার্জে সারাদিন ব্যবহার করা যায় এবং সর্বোচ্চ ২৭ ঘণ্টা ভিডিও প্লেব্যাক সম্ভব। হালকা ব্যবহারে ব্যাটারি সহজেই দিন পার করে, তবে ভারী ব্যবহারে দ্রুত খরচ হয়। প্রয়োজনে আলাদা $৯৯ মূল্যের MagSafe ব্যাটারি প্যাক যুক্ত করলে ব্যাটারি ব্যাকআপ বেড়ে ৪০ ঘণ্টা পর্যন্ত যায়। চার্জিং গতিতে এটি সর্বোচ্চ ২০ ওয়াট পর্যন্ত সমর্থন করে, যা প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক অ্যান্ড্রয়েড ফোনের তুলনায় ধীর।
সফটওয়্যার ও নতুন ফিচার
ডিভাইসটি এসেছে সর্বশেষ iOS 26 নিয়ে, যেখানে যুক্ত হয়েছে “Liquid Glass” ইন্টারফেস। এছাড়া নতুন কল স্ক্রিনিং, লাইভ ট্রান্সলেশন ও ভিজ্যুয়াল ইন্টেলিজেন্স ফিচার ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
iPhone Air মূলত তাদের জন্য, যারা স্মার্টফোনে পাতলা ও হালকা ডিজাইন খোঁজেন। যদিও ক্যামেরা ও স্পিকারের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, টেকসই নির্মাণ, চমৎকার ডিসপ্লে এবং আধুনিক সফটওয়্যার ফিচার একে বাজারে আলাদা করে তুলেছে। স্মার্টফোন বাজারে পাতলা ফোনের প্রতিযোগিতায় এটি অ্যাপলের সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।