ঢাকাসহ সারা দেশে ইসলামপন্থি তিনটি রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি প্রবর্তন, জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনসহ বিভিন্ন দাবিতে তিন দিনের অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পৃথক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিস এই কর্মসূচি ঘোষণা করে। কর্মসূচি শুরু হবে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে।
জামায়াতের কর্মসূচি ও দাবি
রাজধানীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায়, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
ডা. তাহের বলেন, “জুলাই সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়া ছাড়া অভ্যুত্থানের অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।” তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদ পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছেন।
জামায়াতের পাঁচ দফা দাবি হলো:
১. জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন।
২. জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু।
৩. সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
৪. সরকারের ‘জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতি’র বিচার।
৫. জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণ।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মসূচি
রাজধানীর পুরানা পল্টনে সংবাদ সম্মেলনে দলের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) জানান, ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। চরমোনাই পীর জানিয়েছেন, ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো জোটবদ্ধ হওয়ার পথে রয়েছে এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
আরো পড়ুন: সেই এনসিপির নেত্রীকে দল থেকে সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি
খেলাফত মজলিসের দাবি ও কর্মসূচি
খেলাফত মজলিস ছয় দফা দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, জুলাই জাতীয় সনদকে আইনগত ভিত্তি দিতে হবে এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হবে। অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে—সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।
কাদের জানান, ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায়, ১৯ সেপ্টেম্বর মহানগরীতে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, “দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতির পক্ষে।” তবে যুগপৎ আন্দোলনে অন্য কোন দল যুক্ত হবে কি না, তা এখনো খোলাসা করা হয়নি।
এই তিন দিনের কর্মসূচি রাজনৈতিক মহলে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই অভিন্ন আন্দোলন নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিকে কেন্দ্র করে জনমত তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।