ইরানে আবারও ঘটলো প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড। গত মঙ্গলবারের ঘটনার মাত্র দুই দিন পরই এবার খুনের মামলার এক আসামিকে তার অপরাধ সংঘটিত হওয়ার জায়গাতেই ফাঁসি দিলো কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকালে ইরানের কর্দকুই শহরে জনসমক্ষে ফাঁসি কার্যকর করা হয় এক খুনির। স্থানীয় বিচার বিভাগের প্রধান হাইদার আসিয়াবি জানান, অপরাধ সংঘটিত হওয়া স্থানেই এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
গত বছরের শেষ দিকে শিকারের বন্দুক দিয়ে এক দম্পতি ও এক যুবতীকে হত্যার অভিযোগে আদালত ওই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল। মামলার রায় অনুযায়ী, অপরাধের ভয়াবহতা এবং জনরোষের কারণেই প্রকাশ্যে শাস্তি কার্যকর করা হয়েছে।
ইরানে বেশিরভাগ মৃত্যুদণ্ড কারাগারের ভেতরেই কার্যকর করা হয়। তবে যেসব অপরাধে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় কিংবা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রয়োজন মনে করা হয়, সেসব ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দক্ষিণাঞ্চলীয় ফারস প্রদেশে ডাকাতির সময় এক মা ও তার তিন সন্তানকে হত্যার দায়ে আরেকজনকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে এ ধরনের দুইটি ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসলো।

প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড ইরানে নতুন কিছু নয়। তবে টানা দুই দিনে এ ধরনের সাজা কার্যকর করায় আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে দেশটির বিচারব্যবস্থা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে।
ফারস প্রদেশে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনির স্ত্রীকেও একই মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে তার শাস্তি কারাগারের ভেতরে কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে অনেকেই এ ধরনের প্রকাশ্য শাস্তিকে অপরাধ দমনের কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে দেখছেন। তবে সমালোচকদের মতে, এটি বরং ভয় ও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
আরো পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ নতুন বাণিজ্য চুক্তি: বাজার প্রবেশাধিকার বাড়াতে ‘ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট’
মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইরানের এ ধরনের প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নিন্দা জানিয়ে আসছে। তারা মনে করে, ন্যায্য বিচার নিশ্চিত না করে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। তবুও ইরান সরকারের মতে, অপরাধ দমনে এটি একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।