গাজার প্রতিটি সকাল যেন নতুন এক শোকবার্তা নিয়ে আসে। শিশুদের কান্না, মায়েদের বেদনা আর ধ্বংসস্তূপের নিচে হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের আহাজারিতে ভরে গেছে পুরো উপত্যকা। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ গেছে আরও ৭৯ ফিলিস্তিনির। এই মৃত্যু যোগ হলো দীর্ঘ এক বছরের ভয়াবহ গণহত্যার মিছিলে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ৬৫ হাজার ১৪১ জনে। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায়ই আহত হয়েছেন আরও ২২৮ জন। এ নিয়ে ইসরাইলি আগ্রাসনে মোট আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯২৫ জনে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বহু মরদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে। উদ্ধারকারীরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না পাওয়ায় সেসব লাশ সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। একই সময়ে মানবিক সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন ৮ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৩৩ জন।
যুদ্ধ শুধু গোলা-বারুদের ক্ষতিই নয়, গাজার মানুষের কাছে নিয়ে এসেছে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে মারা গেছেন শিশু-নারীসহ আরও ৪ জন। এ নিয়ে অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩৫ জনে, যার মধ্যে ১৪৭ জনই শিশু।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশ নির্ভর করছে শ্রীলঙ্কার জয়ের ওপর
গত ২ মার্চ থেকে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে উপত্যকার ২৪ লাখের বেশি মানুষ এখন দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে। আন্তর্জাতিক সংস্থা আইপিসি (Integrated Food Security Phase Classification) ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে এবং সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এটি পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহল একাধিকবার ইসরাইলকে সামরিক অভিযান থামানোর আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) গণহত্যার মামলা পর্যন্ত দায়ের করা হয়েছে। তবুও পরিস্থিতি কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না।