
লাইলাতুল কদর ইসলামের এক মহিমান্বিত ও পবিত্র রাত, যা পবিত্র কুরআনে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। শবে কদরের ফজিলত এই রাতকে “হাজার মাসের চেয়ে উত্তম” বলা হয়েছে, যার অর্থ এই রাতে ইবাদত করলে হাজার মাসের ইবাদতের সওয়াব পাওয়া যায়। তাই মুসলমানরা এই রাতকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে এবং আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভের আশায় ইবাদতে মগ্ন থাকে।
লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব
এই আয়াতগুলো থেকে বোঝা যায় যে, শবে কদরের গুরুত্ব এতটাই বড় যে এটি হাজার মাসের কাজের সমান। অর্থাৎ, এই রাতে কোনো ভালো কাজ করলে তার পুরস্কার হাজার মাসের কাজের সমান হবে। এটি মুসলমানদের জন্য একটি অমূল্য সুযোগ, যা তারা কোনোভাবেই হারাতে পারে না।
লাইলাতুল শবে কদরের ফজিলত
পবিত্র কুরআনে সূরা কদরে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
“নিশ্চয়ই আমি এটি (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। তাহলে আপনি কিভাবে বুঝতে পারবেন কোন রাত কদরের রাত? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের প্রতিপালকের আদেশক্রমে অবতরণ করেন সকল বিষয়ের জন্য। এটা শান্তি, যা ফজর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।” (সূরা কদর: ১-৫)
লাইলাতুল শবে কদর: রমজানের পবিত্র রাত

লাইলাতুল কদর, যাকে বাংলায় “কদরের রাত” বা “মহিমান্বিত রাত” বলা হয়, ইসলাম ধর্মে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র রাত। এটি রমজান মাসের শেষ দশকে অবস্থিত এবং এই রাতের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদিসে ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এই রাতটি মুসলিমদের জন্য আল্লাহর বিশেষ রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের রাত হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরো পড়ুন: 20+ Eid Mobarak Pictures – Eid mubarak wishes 2025
কদরের রাতটা হলো এমন রাত যেটা হাজার মাসের থেকেও সেরা। এক হাজার মাস ইবাদত করলে যে সওয়াব শবে কদরের রাতে এবাদত করলে এর থেকে বেশি সওয়াব হবে। এক হাজার মাসে হয় ৮৩ বছর চার মাস তো কদরের রাতে আমরা যদি এবাদত করি তাহলে এর চাইতে বেশি সওয়াব হবে।
আল্লাহ রাসূল সাল্লামকে সান্তনা দেওয়ার জন্য বলেছেন হে নবী আপনি চিন্তা করেন না। ইসরাইলের অনেক লোক হাজার বছর হায়াত পেয়েছে হাজার হাজার এবাদত করেছেন, জেহাদ করেছেন। তখনকার মানুষ হায়াত পেয়েছে বেশি কিন্তু কদর পাননি। আমি আপনার উম্মতকে হাজার বছরের বেশি লাইলাতুল কদর প্রদান করেছি।
প্রতিটি মুসলমানের জন্য এই রাত্রি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত।
শবে কদরের ফজিলত কোন রাত? কদরের রাতের ইতিহাস।
অনেকে জানতে চান কবে কদরের রাতটা। রসুল আমাদের জানাতে বের হয়েছিল কবে কদরের রাত। তখন দুইটি মুসলমান ঝগড়া করছিল তখন রাসূল সালাম সেই ঝগড়ার দিকে তাকিয়ে সেই দিনটির কথা ভুলে গেলেন। তখন তিনি বলেছিলেন এই তার একটি কত আমি ঠিক মনে করতে পারছি না।
এই তারিখটি কি ২১,২৩,২৫,২৭ নাকি ২৯ আমি ঠিক মনে করতে পারছি না। তখন তিনি বলেছিলেন আমি এতটুকু বলতে পারি রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রি গুলোতে যদি কদর রাত খোঁজেন তাহলে পাবেন। তাই আপনি বুঝতে পারছেন রমজান মাসের শেষ দিনের যে বেজোড় দিন গুলো আছে সেগুলোতে আমাদের বেশি বেশি এবাদত করতে হবে। এই বেজোড় রাতগুলোর যেকোনো একটিতে কদর রাত আছে।
তাই আমাদের কদরের রাত যেহেতু সুনিশ্চিত ভাবে নির্ধারিত নয়। তাই প্রত্যেকেরই উচিত রমজানের শেষ ১০ দিন বেশি বেশি করে মন দিয়ে এবাদত করা। হতে পারে আপনি ২১ তারিখে মন দিয়ে এবাদত করছেন কিন্তু ২৩ তারিখে আপনি করলেন না। সেদিন আসলে হতে পারে। তাই ২০ থেকে ৩০ রমজান পর্যন্ত প্রত্যেকটি রাতেই আমাদের এবাদত করতে হবে।
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাম বলেছেন আপনি যদি এই কদরের কোনভাবে মিস করে যান তাহলে আপনার মত আর হতভাগ অন্য কেউ হবে না। এই কারণে তিনি আমাদের বারবার শেষ দশ দিন এবাদত করতে বলেছেন। তাই আপনি যদি মুসলমান হয়ে থাকেন অবশ্যই শবে কদর পালন করবেন।
শবে কদরের ফজিলত রাতে যে পাঁচটি কাজ আপনাকে অবশ্যই করতে হবে।
প্রথম কাজ : রাসূল সালাম রমজানের শেষ দশ রাতে ঘুমাতেন না এবং তিনি তার পরিবারের সবাইকে রাতে জাগিয়ে দিতেন কাউকে ঘুমাতে দিতেন না। এই কাজটি আমাদের সবার মেনে চলতে হবে।
দ্বিতীয় কাজ : রাসূল সাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিনে প্রতিরাতে এতেকাফ করতেন। তাই আমাদের সবাইকে এতেকাফ করতে হবে।
তৃতীয় কাজ : যৌথভাবে কুরআন রিভিশন।
চতুর্থ কাজ : কিয়ামুল লাইল। রাসুল সালাম দীর্ঘ সময় কিয়ামুল লাইল করতেন। তাই আমাদেরও শবে কদরের রাতগুলোতে বেশি বেশি করে কিয়ামুল লাইন করতে হবে।
পঞ্চম কাজ : রমজানের শেষ দশকে রাসূল সাল্লাম বেশি বেশি করে দোয়া করতেন। তাই আমাদেরও এই রাতগুলোতে বেশি বেশি করে দোয়া করতে হবে।
শবে কদরের ফজিলত শেষ কথা
শবে কদর হলো মানবজাতির জন্য একটি অমূল্য উপহার। এই রাতে মুসলমানরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন, তাদের পাপ থেকে মুক্তি পেতে পারেন এবং তাদের জীবনকে আধ্যাত্মিকভাবে উন্নত করতে পারেন। এই রাত্রি একটি সুযোগ, যা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে মানুষ তার জীবনে শান্তি ও সুখের পথ খুঁজে পেতে পারে।
তাই, শবে কদরের রাত্রিটি সঠিকভাবে উদযাপন করা এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।