
২০২৫ সালের অন্যতম আলোচিত ইলেকট্রিক SUV হচ্ছে Xiaomi YU7 ২৬ জুন ঘোষণার পর থেকেই এই গাড়ি টেকপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। এবার দেখে নেওয়া যাক এর গুরুত্বপূর্ণ ফিচার, পারফরম্যান্স ও প্রযুক্তির গভীরে।
Xiaomi YU7 এর পাওয়ারফুল ব্যাটারি ও রেঞ্জ
বিশাল ব্যাটারি, দারুণ রেঞ্জ: Xiaomi YU7 এ রয়েছে ৯৬.৩ kWh এর Li-ion LFP ব্যাটারি, যা ৮০০V প্রযুক্তিতে চলে। এক চার্জে গাড়িটি চলতে পারে ৮৩৫ কিমি পর্যন্ত (CLTC)। যা বর্তমান বাজারে Tesla বা BYD-এর অনেক মডেলকেও হার মানায়।
২১ মিনিটে চার্জ! দ্রুত চার্জিং সুবিধা
DC চার্জিং সিস্টেমে মাত্র ২১ মিনিটেই ১০%-৮০% চার্জ করা সম্ভব। Type 2 AC চার্জিং ও CCS সাপোর্ট থাকায় বাংলাদেশে চার্জিং নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
গতি ও পারফরম্যান্স: শুধু শান্ত SUV না, চমকপ্রদ স্পিডও
RWD সিস্টেমে ৩২০ হর্সপাওয়ারের মোটর থাকায় মাত্র ৫.৯ সেকেন্ডেই ০-১০০ কিমি/ঘন্টা গতিতে পৌঁছাতে পারে। সর্বোচ্চ গতি ২৪০ কিমি/ঘন্টা — যা সাধারণ SUV এর চেয়ে বেশ দ্রুত।
স্মার্ট ড্রাইভিং টেকনোলজি: নিরাপত্তায় সম্পূর্ণ সুরক্ষা
আধুনিক সেন্সর ও AI প্রযুক্তি: গাড়িটিতে রয়েছে LiDAR, ১১টি ক্যামেরা, ৪D mmWave রাডার ও ১২টি সেন্সর। ফলে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, লেন চেঞ্জ, অটো ব্রেকিংসহ সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
অ্যাপল ইউজারদের জন্য স্বর্গ: iPhone, Watch, iPad—সব একসাথে
Xiaomi YU7-এর সবচেয়ে ব্যতিক্রমী দিক হলো অ্যাপল ইকোসিস্টেমের গভীর ইন্টিগ্রেশন। iPhone দিয়ে গাড়ির দরজা খুলুন, Apple Watch দিয়ে ক্লাইমেট কন্ট্রোল চালান, এমনকি iPad দিয়ে পেছনের স্ক্রিন কনট্রোল করুন—সব সম্ভব।
অ্যাপল ইন্টিগ্রেশনের বিশেষ কিছু ফিচার
- iPhone-এর Action Button দিয়ে গাড়ি কন্ট্রোল
- CarPlay চালু করতে PIN সিকিউরিটি
- iPad দিয়ে ইন-কার এন্টারটেইনমেন্ট
- Apple Music এর ডেডিকেটেড সাপোর্ট
- Apple Watch দিয়ে গাড়ির ফাংশন নিয়ন্ত্রণ
- Dynamic Island দিয়ে রিয়েলটাইম কন্ট্রোল

আরামদায়ক অভ্যন্তর ও প্রিমিয়াম ফিচার
পাওয়ার রিক্লাইন, হিটেড ও ভেন্টিলেটেড সিট, ম্যাসাজ ফিচার, ৩-জোন ক্লাইমেট কন্ট্রোল ও প্যানোরামিক সানরুফ—YU7 ব্যবহারকারীর আরাম ও স্টাইল দুটোই নিশ্চিত করে।
স্ক্রিন-স্টুডিও: পুরো গাড়ি যেন এক মাল্টিমিডিয়া হাব
মোট ৬টি টাচস্ক্রিন—ফ্রন্ট ১৬.১”, ড্রাইভারের ৭.১”, রিয়ার ২টি ১২.৫” ও এক্সট্রা ৬.৭” সেন্টার স্ক্রিন। সবই ডিট্যাচেবল—যেন আপনি গাড়িতেও হাই-এন্ড ট্যাবলেট ব্যবহার করছেন।
বিশাল স্টোরেজ ও ট্রাঙ্ক সুবিধা
678 লিটার ট্রাঙ্ক ও ১৪১ লিটার ফ্রাঙ্ক (সামনের বুট)। লম্বা ট্রিপ হোক বা শহরের কাজ, জায়গার অভাব হবে না।
চাকা, সাসপেনশন ও বডি ডিজাইন
19-21 ইঞ্চির হুইল অপশন, ডাবল উইশবোন সাসপেনশন, এবং ০.২৪৫ Cd এর ড্র্যাগ কো-এফিশিয়েন্ট—YU7 এর রাইড কোয়ালিটি মসৃণ এবং স্থিতিশীল।
সেফটি & পার্কিং: সব সময় সুরক্ষিত
7টি এয়ারব্যাগ, ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা, অটো পার্কিং, ব্লাইন্ড স্পট অ্যালার্ট, ডোর ওয়ার্নিং সিস্টেম—YU7 পার্কিং থেকে শুরু করে এক্সিডেন্ট রোধে ফুল-প্রুফ।
✅ ভালো দিকগুলো এক নজরে
- ৮৩৫ কিমি বিশাল রেঞ্জ এক চার্জে
- ২১ মিনিটে দ্রুত চার্জিং
- iPhone, iPad, WatchOS এর ফুল ইন্টিগ্রেশন
- ম্যাসাজ সিট সহ আরামদায়ক ইন্টেরিয়র
- অত্যাধুনিক ৬টি স্ক্রিন সিস্টেম
- অত্যন্ত উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি
Xiaomi এবার শুধুই মোবাইল না, গাড়ির দুনিয়াতেও ঝড় তুলতে চলেছে! নতুন YU7 ইলেকট্রিক SUV শুধু স্টাইলিশ নয়, এতে রয়েছে অ্যাপল ইকোসিস্টেমের সাথে চমকপ্রদ ইন্টিগ্রেশন। iPhone, iPad, Apple Watch দিয়েই গাড়ি কন্ট্রোল করা যাবে, এমন প্রযুক্তি বাংলাদেশে প্রথম। ৮৩৫ কিমি রেঞ্জ, ম্যাসাজ সিট, ৬টি স্ক্রিন ও ২১ মিনিটে চার্জিং—YU7 হতে চলেছে নতুন প্রজন্মের সেরা EV।
Xiaomi YU7 কবে বাজারে আসবে?
২০২৫ সালের মধ্যে গ্লোবাল রিলিজ আশা করা যাচ্ছে।
অ্যাপল ডিভাইস ছাড়া কি সব ফিচার পাওয়া যাবে?
হ্যাঁ, তবে অ্যাপল ডিভাইস থাকলে আরও স্মার্ট ফিচার ব্যবহার করা যাবে।
এক চার্জে কত কিমি চলবে?
CLTC অনুযায়ী ৮৩৫ কিমি।
গাড়িটির দাম কত হতে পারে বাংলাদেশে?
ইউরোপে দাম €৩১,৮০০, বাংলাদেশে আনুমানিক ৪০-৪৫ লাখ টাকার মধ্যে হতে পারে।
গাড়িটি কি বাংলাদেশে চার্জ দেওয়া সম্ভব?
হ্যাঁ, CCS ও Type 2 চার্জিং সাপোর্ট থাকায় এখনকার বেশিরভাগ EV স্টেশনেই চার্জ দেওয়া যাবে।
Xiaomi YU7 এর সম্ভাব্য দাম ও কারা এটি কিনবেন?
Xiaomi YU7 এর ঘোষিত বেস প্রাইস ইউরোপে হচ্ছে €৩১,৮০০। বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ৪০ থেকে ৪৫ লাখ টাকার মধ্যে দাম পড়তে পারে (শুল্ক ও ডিউটি ভেদে ভিন্ন হতে পারে)। যদিও এটা Tesla Model Y বা BMW iX3 এর তুলনায় সস্তা, কিন্তু ফিচারের দিক থেকে YU7 কোনোভাবেই পিছিয়ে নেই। বরং অ্যাপল ইকোসিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, ৮৩৫ কিমি রেঞ্জ ও প্রিমিয়াম ইন্টেরিয়র এটিকে আলাদা করে তোলে।
এই গাড়িটি মূলত তাদের জন্য উপযুক্ত যাঁরা টেক-সাভি, আধুনিক ডিভাইস ব্যবহার করেন এবং EV গাড়ির ভবিষ্যত বুঝে আগেভাগে বিনিয়োগ করতে চান। বিশেষ করে যাঁদের iPhone, Apple Watch বা iPad আছে, তারা এক নতুন স্মার্ট ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা পাবেন। আবার কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ, স্মার্ট পরিবার, এমনকি ইউটিউবার বা ভ্লগারদের কাছেও এটি হতে পারে পারফেক্ট গাড়ি-স্টাইল, স্মার্টনেস আর সেফটির দুর্দান্ত মিশেল।