
গোপালগঞ্জের ঘটনায় দোষটা কাদের: গোপালগঞ্জ জেলায় ১৬ জুলাই ঘটে গিয়েছে এক নির্মম পরিস্থিতির ঘটনা। যেখানে চারজন নিহত এবং আহত হয়েছে আরো অনেকে। এনসিপির নেতারা বরিশালে তাদের পদযাত্রা শেষ করে গোপালগঞ্জ জেলায় আসেন। তারপর ঘটে এই ঘটনা।
বিশ্লেষকরা এই ঘটনাকে কোন দৃষ্টিতে দেখছে এবং এই ঘটনার পিছনে কি লুকিয়ে আছে এবং ঘটনায় দোষটা কাদের এই সমস্ত বিষয়ে বিশ্লেষন করেছেন এখন টিভিতে ‘এখন প্রকাশ’ অনুষ্ঠানে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
১. রুহিন হোসেন প্রিন্স – সাধারণ সম্পাদক সিপিবি’র।
২. আবু আলম মোঃ শহিদ খান, সাবেক সচিব। এবং
৩. আব্দুন নূর তুষার, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
আব্দুন নূর তুষার
এখন টিভির উপস্থাপক মোস্তফা কামাল স্বপন আব্দুন নূর তুষার কে প্রশ্ন করার আগে যে কথা বলেন তা হলো: মোস্তফা কামাল স্বপন বলেন গোপালগঞ্জের যে ঘটনাটি ঘটলো এই ঘটনাটি কোন ভাবে এড়ানো যেত কিনা? বিকেলে ১৪৪ ধারা জারি হল সেটা সকালে হলে কি হতো? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ঘটনা রচনা ঘটেছিল যে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ ভেঙে দেয়া হবে, গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে এইসব বিষয়ে অনেক প্রচারণা এবং অপ প্রচারণা করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বুঝতে পারছিলাম কিছু একটা হতে চলেছে। প্রথম প্রশ্ন ছিলো স্বপনের এই ঘটনা এরানো যেত কিনা?
এই প্রশ্নের উত্তরে আব্দুন নুর তুষার বলেন নিশ্চয়ই! এটা এড়ানে যেত। কিন্তু এই বিষয়টি যারা এড়াতে পারতো তারা এই বিষয়টিকে না এড়িয়ে তারা এটাকে আরো বেশি উস্কানি দিয়েছেন।
কিভাবে উস্কানি দিয়েছেন? শান্তিপূর্ণ পদযাত্রার ঘোষণা দিয়েছেন একটি দল, কিন্তু সে দলটি অনিবন্ধিত। তাদের কোন রেজিস্ট্রেশন নেই। অফিসিয়ালি তারা এখনও বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দল না। তারা একটি সংঘ যারা রাজনৈতিক দল হতে চাই। তারা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কাছে নিবন্ধন চেয়েছে।
নিবন্ধন বাতিল করলে যদি কোন দল রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন করতে না পারে অথবা নিবন্ধন স্থগিত করলে যদি কোন দলের কার্যক্রম স্থগিত রাখা যায় অথবা তাদের প্রতিক বাতিল করা যায়। তাহলে ওই একই অবস্থায় যাদের নিবন্ধন নেই, তারা প্রত্যেকেই আছে। তার মানে একটি অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল তাদের পদযাত্রা ঘোষণা দিয়েছে সেটা তাদের কমিউনিকেশন প্রাক্টিস বা তারা জনগণের কাছে যাচ্ছে।
এর আগে তারা যে কয়টি জেলায় গিয়েছে সেখানে তারা পদযাত্রা হিসেবে প্রবেশ করেছেন। কিন্তু গোপালগঞ্জ জেলায় প্রবেশের পূর্বে তারা অধিক উত্তেজনায় লিখেছেন ‘লং মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ হিসেবে প্রবেশ করেছেন। তারপরে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তারা উস্কানিমূলক অনেক কথাবার্তা বলেছেন। গোপালগঞ্জের প্রবেশের পূর্বে তাদের মূল লক্ষ্য ছিল তারা মুর্দাবাদ করতে যাচ্ছেন গোপালগঞ্জে। তারপরে এমন ধারণাও এসেছে বিদেশ থেকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে এবার কিছু হবে না, কিন্তু পরে কিন্তু সমস্যা আছে। এই রকম উস্কানিমুলক কথা বার্তা আমাদের চোখের সামনে চলছে। কিন্তু যারা এই উস্কানিমূলক কথাবার্তার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলার ব্যবস্থা নেবেন তারা অনেকটা ‘দেখি না কি করে’ ভানুর কৌতুকের মতো বসে ছিলেন এমনটি বলেন আব্দুন নূর তুষার।
এখন টিভির উপস্থাপকের যে প্রশ্নটি ছিল যে ১৪৪ ধারা সকালেই জারি করা যেত কিনা? সেই উত্তরে আব্দুন নূর তুষার বলেন এটা সকালেই জারি করা যেত না এই কারণে কারণ ১৪৪ ধারা মানে যেখানে চারজন ব্যক্তি একসাথে থাকতে পারবেনা। আর সকাল থেকেই যদি এই জারি হতো তাহলে এনসিপি তো এখানে সমাবেশ করতে পারত না। যার কারণে সকাল থেকে এই ধারা জারি করা যেত না। তারা আসলে NCP কে সমাবেশ করতে দিতে চেয়েছেন। এই সমাবেশে যে ধরনের বক্তৃতা দিয়েছেন তারা তার তো ভিডিও আছে।
বক্তৃতার মধ্যে এমন ভাবে বক্তৃতা দেন যে নিজেদের বক্তব্যের চেয়ে বরং অন্যদেরকে সতর্কতার প্রবণতা বেশি থাকে, তাহলে স্বাভাবিকভাবে এই কথাটা মনে রাখতে হবে যে, আপনি যদি একটা পারায় ঢুকেন এবং সেই পাড়ায় একজন বড় ভাই আছেন সেই বড়ভাইকে সবাই শ্রদ্ধা করেন। অন্য পাড়ার লোক ঢুকে সেই বড় ভাইয়ের নামে কিছু বললে সে যাই হোক না কেন পাড়ার লোকজন তার প্রতিবাদ করে। আর ঢুকেছেন এমন একটি জায়গায় যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের কবর আছে। এবং সেইটাকে নিয়ে নানান ধরনের ধোঁয়াশা তৈরি করা হয়েছে সেটাকে তারা কি করবে, কি করতে পারে। এই রকম করলে সেখানে প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
আরো পড়ুন: আজকের সোনার দাম – ১৬ জুলাই ২০২৫ | Gold Price in Bangladesh
এই উত্তর দিতে দিতে আব্দুন নূর তুষার উল্টো প্রশ্ন করেন যে আমার আরেকটি প্রশ্ন আছে যে একটি অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে প্রতিরক্ষা দেওয়ার জন্য রাজ্যের সমস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এক জায়গা হয়ে যাচ্ছে এটা কি আসলে সরকারি দল? এইটার জন্য টাকা খরচ হয় না?
অন্য সব রাজনৈতিক দলকে কি এরকম পাহারা দিবে? কালকে যদি দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলও এরকম পদযাত্রা বা কর্মসূচি শুরু করে সেখানে কি এমনভাবে রাষ্ট্রীয়বাহিনীর প্রতিরক্ষায় সমস্ত জায়গায় সভা করতে দেওয়া হবে। আজকে যেমন ফরিদপুরে তাদের পাহাড়া দিচ্ছে কেন? ফরিদপুরে কি হয়েছে। শুরুর থেকে কি তাদের এত পাহাড়া দেওয়া হবে। প্রহরা দিয়ে তাদেরকে জনপ্রিয় করতে হবে? জনগণের নিরাপত্তার বদলে তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে কেন?
উৎস: এখন টিভি