
ভারত সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলার পর পাকিস্তান চীনা PL-15 ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছে
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আবারও বেড়ে গেছে। সম্প্রতি ভারত “অপারেশন সিন্দুর” নামে একটি সামরিক অভিযান চালায়। এই অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে অবস্থিত সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান তাদের প্রতিরক্ষা পদক্ষেপে চীনা তৈরি PL-15 ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ঘটনার পেছনের প্রেক্ষাপট
২২ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হন। এদের অনেকেই ছিলেন পর্যটক। প্রথমে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামে একটি গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করে, পরে তারা সেই দাবি প্রত্যাহার করে। ভারত সরাসরি পাকিস্তানের উপর হামলার পেছনে মদতের অভিযোগ আনে, যদিও পাকিস্তান তা অস্বীকার করে।
এই ঘটনার পর ৭ মে ভারত “অপারেশন সিন্দুর” শুরু করে। তারা নয়টি স্থানে বিমান হামলা চালায়, যার মধ্যে বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকেও ছিল। এসব স্থানে জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈয়বার মতো সংগঠনের সন্ত্রাসী ক্যাম্প থাকার অভিযোগ ছিল।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া এবং PL-15 ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার
ভারতের এই হামলার জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা সামরিক অভিযান চালায়। তারা দাবি করে, ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান এবং কয়েকটি ড্রোন তারা ভূপাতিত করেছে। এই অভিযানে পাকিস্তানের J-10C যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়। এই বিমানে যুক্ত ছিল চীনা নির্মিত PL-15 ক্ষেপণাস্ত্র।
PL-15 হল একটি দূর পাল্লার আকাশ-থেকে-আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ২০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে শত্রু বিমানে আঘাত হানতে পারে। ক্ষেপণাস্ত্রটি শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি গতিতে চলতে পারে এবং এতে রয়েছে উন্নত রাডার প্রযুক্তি। চীনের জেংঝু এয়ারবোর্ন মিসাইল একাডেমি এটি তৈরি করেছে।
হতাহতের তথ্য
ভারতের দাবি অনুযায়ী তাদের হামলা শুধুমাত্র সন্ত্রাসীদের স্থাপনাগুলোতে হয়েছিল এবং বেসামরিক এলাকায় আঘাত হানে না। অন্যদিকে পাকিস্তান জানায় ভারতের হামলায় ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ভারত জানায় তাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি কারণ তারা সময়মতো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে পেরেছিল।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ মহাসচিব দুই দেশকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই দেশের মধ্যে যেকোনো যুদ্ধ বিশ্বে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনসহ অনেক দেশ দুই পক্ষকেই আলোচনায় ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।
পাকিস্তান PL-15 ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করায় এই অঞ্চলের সামরিক ক্ষমতা নতুন মোড় নিয়েছে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এখনো তুঙ্গে। বিশ্বের অনেক দেশের মতামত—এখনই সময়, আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজা উচিত।