
বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন রহস্যময় Sukunaarchaeum
জীব আর অজীবের মাঝখানে দাঁড়িয়ে Sukunaarchaeum mirabile যেন এক রহস্যময় সেতুবন্ধন হয়ে দাড়িয়েছে। এটি নিজে RNA ও রিবোজোম তৈরি করতে পারে যা ভাইরাস পারে না। আবার, শক্তি উৎপাদন বা বিপাকক্রিয়া ছাড়াই টিকে থাকে হোস্টের উপর নির্ভর করে। জীববিজ্ঞানে এমন এক দ্বৈত বৈশিষ্ট্যের সত্তা আগে কখনও দেখা যায়নি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই জীব আমাদের জীবনের সংজ্ঞা পুনঃসংজ্ঞায়িত করতে বাধ্য করবে। Sukunaarchaeum যেন জীব ও ভাইরাসের মাঝখানে দাঁড়িয়ে এক নতুন জগতের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
জীবনের সংজ্ঞা কি বদলে যাচ্ছে?
আমরা অনেকেই জানি, জীব বলতে এমন সত্তাকে বোঝায় যেটি নিজে থেকে শক্তি উৎপাদন করতে পারে। নিজস্ব বিপাকক্রিয়া আছে এবং বংশবৃদ্ধি করতে সক্ষম। ভাইরাসের ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো মানায় না বলেই অনেক বিজ্ঞানী তাদের ‘জীব’ বলে স্বীকার করেন না তারা মনে করেন এটা অজীব। কিন্তু নতুন এক আবিষ্কার এই সংজ্ঞাকেই চ্যালেঞ্জ করছে।
Sukunaarchaeum mirabile এর মাঝামাঝি অবস্থানের এক নতুন সত্তা
কানাডা ও জাপানের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি খুঁজে পেয়েছেন একটি অজানা জীবসত্তা, যার নাম দিয়েছেন Sukunaarchaeum mirabile। এটি এমন একটি অর্গানিজম যেটি ভাইরাস ও আর্কিয়ার মধ্যবর্তী অবস্থানে। এটি নিজে RNA তৈরি করতে পারে, কিন্তু হোস্ট ছাড়া টিকে থাকতে পারে না।
আপনার জন্য: ছেলেদের জন্য কোন শ্যাম্পু ভালো: যেভাবে চুলে শ্যাম্পু করা উচিত
Sukunaarchaeum mirabile নামের পেছনের গল্প
জীবটির নাম রাখা হয়েছে জাপানি পুরাণের এক ক্ষুদ্র আকারের দেবতা ‘সুকুনা’-এর নামে। ‘মিরাবিল’ শব্দের অর্থ বিস্ময়কর যা এই জীবের অদ্ভুত প্রকৃতিকে নির্দেশ করে।
Sukunaarchaeum mirabile সাধারণ ভাইরাসের চেয়ে আলাদা
এই নতুন সত্তা সাধারণ ভাইরাসের চেয়ে ভিন্ন কিছু বৈশিষ্ট্য ধারণ করে:
- এটি নিজস্ব রিবোজোম তৈরি করতে পারে
- বার্তাবাহক RNA বা mRNA উৎপাদনে সক্ষম
- ভাইরাসের মতো নিজে শক্তি উৎপাদন করতে পারে না
- কিন্তু ভাইরাসের বিপরীতে, নিজে জিনের অনুলিপি তৈরি করতে পারে
Sukunaarchaeum এর জিনোম রহস্য
এই সত্তাটির জিনোম মাত্র ২,৩৮,০০০ বেস পেয়ার। তুলনামূলকভাবে, আর্কিয়ার সবচেয়ে ছোট জিনোম ৪,৯০,০০০ বেস পেয়ার। অর্থাৎ Sukunaarchaeum-ই এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে ক্ষুদ্র জিনোমধারী আর্কিয়া।
কোন কাজগুলো করতে পারে না?
Sukunaarchaeum এর সীমাবদ্ধতা:
- এটি খাবার হজম করতে পারে না
- শক্তি উৎপাদন করতে পারে না
- কোনো বিপাক প্রক্রিয়া নেই
তবে, এর DNA রেপ্লিকেশন ও RNA ট্রান্সক্রিপশনের জন্য নিজস্ব যন্ত্রাংশ রয়েছে। এদিক থেকে এটি ভাইরাসের চেয়ে অনেক বেশি কোষীয় বৈশিষ্ট্য বহন করে।
কিভাবে আবিষ্কৃত হলো?
ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রিও হারাডা ও তার দল Citharistes regius নামের এক সামুদ্রিক প্ল্যাঙ্কটনের জিনোম বিশ্লেষণ করার সময় একটি অজানা DNA লুপ শনাক্ত করেন। গবেষণায় উঠে আসে, এটি সম্পূর্ণ নতুন এক আর্কিয়া গোত্রভুক্ত জীবসত্তা।
আপনার জন্য: দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ঘরোয়া উপায় – যে নিয়ম মেনে চললে কোনদিন গ্যাস হবে না
Sukunaarchaeum আমাদের ভাবতে বাধ্য করছে
এই জীবের আবিষ্কার জীববিজ্ঞানের একটি মূল প্রশ্ন নতুন করে সামনে এনেছে—“জীবন বলতে আসলে আমরা কী বুঝি?” Sukunaarchaeum এমন এক অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে জীব ও অজীবের সীমানা ঝাপসা হয়ে যায়।
বিজ্ঞানীদের মতামত
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই জীব এমন এক জটিলতা বহন করে যা জীববিজ্ঞানের প্রচলিত ধারা প্রশ্নবিদ্ধ করে। এটি প্রমাণ করে যে, কোষীয় জীবন ও ভাইরাসের মধ্যে আরও অনেক রূপান্তরধর্মী সত্তা থাকতে পারে।
এই আবিষ্কার কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
এই আবিষ্কার শুধু জীববিজ্ঞানের সংজ্ঞাই পাল্টে দিচ্ছে না, বরং কোষীয় বিবর্তনের ইতিহাস নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। এটি ভবিষ্যতের গবেষণার জন্য এক নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে।