২০২৫ সালের ই-পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র ও কত টাকা লাগবে

২০২৫ সালের ই-পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র ও কত টাকা লাগবে

বর্তমানে এবং পূর্বেও বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি হয়রানি হয়ে থাকে পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে। বর্তমান বাংলাদেশ পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দিয়েছে সরকার। যার কারনে আপনার এক্সটা একটি ধাপ দূর হয়েছে। এখন আপনি যদি একটি নতুন ই পাসপোর্ট অথবা আপনার পুরানো ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে নতুন করে করতে গেলে কি কি কাগজপত্র লাগবে এবং কত টাকা লাগবে এ বিষয়ে আজকের পোস্টে সম্পূর্ণ জানতে পারবেন।

ই-পাসপোর্ট এর জন্য অনলাইনে আবেদন

পাসপোর্ট এর জন্য অনলাইনে আবেদন প্রত্যেকটা মানুষই করতে পারেন। কিন্তু অনেকেই বুঝেন না এবং পারেন না যার কারণে আমরা প্রত্যেকটা মানুষই দোকানের সাহায্য নিয়ে থাকি। সেই দোকান থেকে আমরা পাসপোর্ট এর জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারি। যেহেতু এই সার্ভিসটার দোকান থেকে পাওয়া যায় তাই সেখানে কোনরকম কোন ঝামেলা নাই।

ঝামেলা শুরু হয় ওইখানে যখন আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সরাসরি আপনার কাগজপত্রগুলো জমা দিবেন। তখনই শুরু হয় বিভিন্ন জায়গার পাসপোর্ট অফিসের ডেস্কের যে সকল ব্যক্তিগণ থাকেন সে সকল ব্যক্তিরাই অনেক মানুষকে হয়রানি করে থাকেন অযথা। অনেকেরে কাগজপত্র ঠিক থাকার পরেও তাদেরকে বিভিন্ন বাহানের কারণে তাদের পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা নেন না। একটি পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিকের প্রতিটা ডকুমেন্টর প্রয়োজন রয়েছে। তবে তারা যেরকম ভাবে বলে সেরকমভাবে নয়।

তারা এই সকল হয়রানি করে থাকেন কিছু থাকা খাওয়ার জন্য। তখন আপনাকে একটি অফার করবে যে আপনার এই কাগজপত্র দিতে হবে না আজকেই আপনার কাজটি সম্পূর্ণ করে দেবো তার বিনিময়ে আমাদেরকে কিছু দিতে হবে। এটাই মূল তাদের লক্ষ্য থাকে তবে বর্তমান সময়ে এসে এটি কমে গেছে। তবুও অনেকের সরলতার সুযোগ নেয় অনেকেই।

এই কারণে পাসপোর্ট অফিস কিন্তু সবার বাড়ির কাছে থাকে না অথবা ধারে কাছে থাকে না। পাসপোর্ট অফিস নির্ধারিত একটি জেলার মধ্যে হয়ে থাকে সেই কারণে সে জেলার মধ্যে গিয়ে পাসপোর্ট অফিসে যাতায়াত করতে অনেক টাকায় খরচ হয়। আর সেখানে যদি আপনাকে ২/৩ বার যেতে হয় তাহলে কিন্তু অনেকেরই খারাপ লাগে এবং সে একটি হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। এই হয়রানিতে যাতে না পড়েন সেজন্য আপনি কি কি কাগজপত্র পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে যাবেন সে সম্পর্কে নিচে আমি বিস্তারিত দেখিয়ে দিয়েছি।

কি কি কাগজপত্র লাগবে পাসপোর্ট অফিসে?

১. অনলাইনে আবেদনকৃত ফরমের প্রিন্ট কপি।
২. এপয়েন্টমেন্ট শিডিউলের প্রিন্ট কপি।
৩. ফি জমা প্রদানের রসিদ (যদি থাকে)
৪. মূল জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন সনদ এবং তার ফটোকপি।
৫. পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এবং পাসপোর্ট এর ডাটা পেইজ এর ফটোকপি (যদি থাকে)
৬. ১৮ (আঠার) বছরের নিম্নে আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ ও পিতা-মাতার এনআইডি কার্ড।
৭. ০৬ (ছয়) বছরের নিম্নে আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট সাইজের ও 3R সাইজের ম্যাট পেপারে রঙ্গীন ছবি।
৮. নিজের/পিতার/মাতার নাম, জন্ম তারিখ ইত্যাদির ক্ষেত্রে তথ্য পরিবর্তন করা যাবে না।
৯. ফরম পূরণ ও ব্যাংকে টাকা জমাদানের সময় নামের বানানে কোন ভট (.)/ হাইফেন (-)/ কমা (,) থাকলে তা ব্যবহার করা যাবে না। (NID তে থাকলেও)

উল্লেখ্য যে, স্থায়ী ঠিকানা, বৈবাহিক অবস্থা, পেশা অথবা অন্যান্য তথ্যাদি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পরিবর্তিত তথ্য সংশিষ্ট যাবতীয় দলিলাদি দাখিল করতে হবে।

পাসপোর্ট করতে কত টাকা খরচ যাবে

দেখুন পাসপোর্ট করতে অতিরিক্ত কোন টাকা খরচ যায় না। যদি না আপনি কোন দালালের খপ্পরে পড়েন। তাই অবশ্যই আপনি দেখে নিবেন সরকারি কত টাকা চার্জ ধার্য করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের কত টাকা পাসপোর্ট করতে চার্জ নিয়ে থাকেন সেই লিস্টটি আমি নিচে দিয়ে রাখছি আপনি দেখে নিন। আপনি সময় অনুযায়ী কত টাকা খরচ যাবে এবং আপনার কতটা জরুরিতে লাগবে সেক্ষেত্রে কত টাকা খরচ যাবে সেটিও আমি নিচে ব্যাখ্যা সহকারে দিয়ে দিচ্ছি।

ই-পাসপোর্ট আবেদন ফি এর সাথে ১৫% ভ্যাট সংযোজিত করবে।

সঠিক পরামর্শ

উপরে দেওয়ার নয়টি কাগজগুলো আপনি সংগ্রহ যদি করে থাকেন তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে জমা দিতে পারবেন। তবে এখানে লক্ষ্য রাখবেন অনলাইনে আবেদন করার আগে ৯ নাম্বারে যে কথাটি বলেছে সেটি অবশ্যই মানতে হবে এবং সে অনুপাতে কাজগুলো করতে হবে। আপনি অনলাইনে যখন আবেদন করবেন তখন ভোটার আইডি কার্ডে কোন প্রকার ডট, হাইফেন বা কমা থাকলে সেটি ব্যবহার করা যাবে না।

তাছাড়া আপনি যখন প্রতিটা কাগজ সংগ্রহ করবেন তখন অবশ্যই সেই কাগজের নামের বানান এবং ঠিকানার বানানগুলো সঠিক আছে কিনা কোথাও কোন ছোট একটি লেটারে ভুল আছে কিনা সেটা যাচাই করে নিবেন। তাছাড়া অনেকেরই জন্ম তারিখে সমস্যা হয়ে থাকে সেটি ও দেখে নিবেন। যদি আপনার উপরোক্ত কাগজ গুলোর মধ্যেও কোনো একটি সমস্যা থেকে থাকে আপনার চোখে ধরা পড়ে তাহলে সেটি আগেই সমাধান করে তারপর পাসপোর্ট অফিসে যাবেন।

প্রথমত আপনার বাবা-মায়ের এনআইডি কার্ড এর সাথে আপনার জন্ম সনদ অথবা ভোটার আইডি কার্ডের অবশ্যই নাম গুলোর মিল থাকতে হবে। এর পরবর্তীতে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের সাথে জন্ম নিবন্ধনের কার্ডের নাম জন্ম তারিখ সহ সকল ডকুমেন্ট এবং ঠিকানা মিল রয়েছে কিনা সেটি যাচাই করে নিবেন। এরপরে আপনি যখন অনলাইনে আবেদন করবেন সেখানে কাগজপত্র তে সবকিছু ঠিক আছে কিনা কোথাও কোন বানান ভুল আছে কিনা সেটি দেখে নিবেন।

• সৌদি আরব ভিসা চেক পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে – saudi visa check
• ই-পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে দেখুন

যদি আপনার এই কাগজপত্র গুলোতে কোন একটি জায়গায় ভুল থাকে সেই ভুলটাই কিন্তু আপনাকে ধরিয়ে গাধার খাটনি খাটাবে। এই কারণে শুধুমাত্র আমরা কিন্তু অনেকেই পাসপোর্ট অফিসের ডেস্কে থাকা লোকেদের অনেক সময় ভুল বুঝি বা তাদেরকে আমরা বলে থাকি আমাদেরকে অযথা হয়রানি করতেছে। তবে এখানে আপনার নিজেরও কিন্তু ভুল রয়েছে যার কারণে আপনি এই হয়রানি শিকার হচ্ছেন। এই কারণে আপনি আপনার বাড়ি থেকেই বা বাসা থেকেই সমস্ত কাগজপত্র সমস্ত নাম-ঠিকানা তারিখ যাচাই করে তারপর পাসপোর্ট অফিসে যাবেন।

এই সকল কাগজপত্র সঠিক থাকার পরেও যদি আপনাকে হয়রানি করার চেষ্টা করে তাহলে আপনি সরাসরি এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবেন। তার কাছে সমস্ত বিষয়টি খুলে বলবেন তাহলে সে আপনাকে সহযোগিতা করবে। যদিও তারপরও আপনার যদি ওই সহযোগিতাটা না পান তাহলে আপনি আশেপাশে প্রশাসনের কার্যালয় গিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন। তবে আশা করা যায় আপনি যদি পাসপোর্ট অফিসের এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরের সাথে যোগাযোগ করেন তাহলে আপনার আর কারো কাছে যেতে হবে না।